পিবিএ ডেস্ক: তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দালাইলামার জীবন সবার কাছেই অনেক কৌতূহলের একটি বিষয়। সবার মনে একই প্রশ্ন,নির্বাসিত এ ব্যক্তিত্বের ব্যক্তিগত জীবন আসলে কেমন ছিল?
এসব রহস্যের খোলাসা করেছেন ভারতীয় এক ফটোসাংবাদিক রাঘু রাই। তিনি খুব কাছ থেকেই দালাইলামাকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন।
রাঘু রাই-এর একটি নতুন বই (অ্যা গড ইন এক্সাইল) বাজারে পাওায়া যায়,যেখনে তিনি অনেকটা নজিরবিহীন ভাবে তুলে ধরেছেন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একজন আধ্যাত্মিক নেতার জীবন। লোকচক্ষুর অন্তরালে কিভাবে কাটে দালাইলামার সময় কিংবা ঘরে বাইরে কি করে সময় কাটান তিনি তার সবকিছুই উঠে এসেছে এ বইতে।
মি. রাই তিব্বতের এই ধর্মীয় নেতার ছবি প্রথম তুলেছিলেন ১৯৭৫ সালে। সে ঘটনার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেছেন, “কিভাবে যেন আমি তাঁর (দালাইলামা) সাথে দৃষ্টি বিনিময়ের সুযোগ করে ফেললাম এবং তাকে বললাম যে তাঁর কিছু ছবি তুলতে পারি কি-না। তিনি হাসলেন এবং বললেন, হ্যাঁ।”
এরপর তিনি দালাইলামার ছবি তুলেছেন বহুবার এবং গড়ে তুলেছেন এক ‘গভীর বন্ধুত্ব’। ১৯৫৯ সালের মার্চে চীনা সেনাবাহিনীর হামলার মুখে ভারতে পালিয়ে এসেছিলেন দালাইলামা, তখন তিনি বিশের কোঠায় থাকা এক তরুণ।
পরে ভারত সরকার তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয় এবং তিনি আবাস গড়েন উত্তরাঞ্চলীয় শহর ধর্মশালায়। তাকে অনুসরণ করে নির্বাসনে আসে তিব্বতের প্রায় ৮০,০০০ মানুষ এবং তারা একই শহরে বসবাস শুরু করে।
একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে দালাইলামা একটি অনুষ্ঠানে একজন নারীকে আশীর্বাদ করছেন।
মি. রাই বলছেন, “যখন তিনি তিব্বতের কারও দিকে তাকান। তখন তাঁর চোখ দেখা উচিত। মনে হবে দাদু তার নাতি বা নাতনীকে আদর করছেন।”
২০১৪ সালে মি. রাই নিজের তোলা দালাইলামার ছবি নিয়ে একটি বই প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেন। এসব ছবির বেশিরভাগই তোলা হয়েছে দালাইলামা যখন নিজের মতো করে একান্তে সময় কাটাচ্ছিলেন তখন। এসব ছবি দেখে অনেকেই তাঁর প্রাত্যহিক জীবনের একটি ধারণা পাবে।
ফটোসাংবাদিক রুঘু রাই বলছেন, “তিনি প্রাণীর সাথে খেলতে ভালোবাসেন। একদিন আমি তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম তখন হঠাৎ তার সাথে একটি বিড়াল দেখতে পাই”।
ধর্মশালায় ২০১৫ সালে দালাইলামার ৮০তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানের ছবিও তোলেন মি. রাই। সেখানে দালাইলামার বড় ভাইও এসেছিলো এবং তাকে কৌতুক করে তিনি পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন ‘ট্রাবলমেকার বা সমস্যাসৃষ্টিকারী’ হিসেবে।
রাঘু রাইয়ের তোলা কিছু ছবিতে দেখা যাচ্ছে দালাইলামা নিজের টেলিভিশন ঠিক করছেন কিংবা বাড়িতে বাগানের কাজ করছেন, আর এসব তিনি নিজের হাতে করতেই পছন্দ করেন।
“আসলে তিনি আমাকে বহু ভাবে ছবি তোলার সুযোগ করে দিয়েছেন” বলেছেন মিঃরায়। তার পুরো জীবনী খুব সুন্দর করে গুছানো আছে রাঘু রাই-এর “অ্যা গড ইন এক্সাইল” বইটিতে।
পিবিএ/মোফা