পিবিএ ডেস্ক: ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ‘কবরের শান্তি’ বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের ‘বন্দি মুক্তি কমিটি’র সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ভানু সরকার। রবিবার ইরানি গণমাধ্যম রেডিও তেহরানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন তিনি।
কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় বিভিন্ন বিধিনিষেধের মধ্যে বর্তমানে সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে বলে কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের একাংশ যে দাবি করেছেন তা যে পুরোপুরি সত্য নয় সেটি ভানু সরকার মনে করিয়ে দেন।
ভানু সরকার বলেন, ‘প্রথমত, সেখানে প্রায় ৮ লাখের কাছাকাছি সামরিক বাহিনী উপস্থিত আছে। প্রত্যেক দশজন কাশ্মীরির জন্য একজন সামরিক বাহিনীর সদস্য সেখানে উপস্থিত। সেখানে (জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা) অজিত ডোভালের মনে হতে পারে পরিস্থিতি স্বাভাবিক, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অমিত শাহ অথবা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বাভাবিক মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের সাধারণ মানুষ কোনো সময়েই যেখানে ৭/৮ লাখ সামরিক বাহিনী নিয়োজিত আছে সেই জায়গাকে স্বাভাবিক বলে মনে করে না এবং আমরা মানবাধিকার কর্মীরা তো মনে করিই না।’
তিনি বলেন, স্বাভাবিক যদি হত তাহলে সেখানে অত সামরিক বাহিনী রাখার দরকার হত না। কাশ্মীরিদের একটা ম্যাসেজ দেয়া হচ্ছে যে, শান্তি তখনই ফিরবে যদি তুমি চুপ করে যাও। ভারতের সমস্ত অত্যাচার তুমি মুখ বুজে সহ্য করে নাও। প্রতিদিন মানুষ নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে, অত্যাচার করা হচ্ছে, হাজার হাজার মানুষকে জেলে বন্দি করা হচ্ছে এবং কুখ্যাত জননিরাপত্তা আইনে (পিএসএ) প্রচুর মানুষকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। দিনের পর দিন তাদেরকে বিনাবিচারে রাখা হচ্ছে। এ সমস্ত কিছু যদি ঠিকঠাক মেনে নাও তাহলে সেটা স্বাভাবিক হবে, শান্তি ফিরবে। আর যদি বলেন যে শান্তি? তাহলে বলতে হয় কবরের শান্তি। জম্মু-কাশ্মীরে বিশেষত কাশ্মীরে বর্তমানে কবরের শান্তি বিরাজ করছে।’
ভানু সরকার বলেন, পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সামরিক বাহিনী যে অঞ্চলে নিয়োজিত তার নাম হচ্ছে কাশ্মীর। সেখানকার অবস্থা আমাদের দেশের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, নেতা-মন্ত্রীদের স্বাভাবিক মনে হতে পারে কিন্তু ভারতের সাধারণ মানুষ কাশ্মীরকে এখন স্বাভাবিক মনে করছে না। মানবাধিকার কর্মীরা কোনোদিনই মনে করি না যে কাশ্মীর স্বাভাবিক আছে। সেখানে মানবাধিকারের শেষ চিহ্নটুকু পর্যন্ত নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পিবিএ/বাখ