লেখাটাই প্রেম, শেষ দিন পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা…

শিরিনা আক্তার: যেখানে অন্যায় অত্যাচার, অপরাধ, দুর্নীতি, দুঃশাসন সেখানেই নির্ভীক, সাহসী, এক সাংবাদিকের নাম ওসমান গনি। তিনি খুব গুণী মানুষ। লেখালেখির জন্য নিবেদিত। সংবাদপত্রে লেখালেখি শুরু করেছিলেন স্কুল ও কলেজে লেখাপড়ার সময়। এখনও লেখেন নিয়মিত । তবে বয়স আস্তে আস্তে বাড়লেও মনের দিক থেকে এখন অনেক শক্ত। মনটা সতেজ ও সবুজ। দিব্য দৃষ্টি। দেখার চোখ বাঁচিয়ে রেখেছেন। আগলে রেখেছেন বোধ-বুদ্ধি-বিবেক। হ্যাঁ, তার লেখার উদ্দেশ্য সমাজ ও দেশ কে দুর্ণীতিমুক্ত করা আর সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করা। পাঠককে মুগ্ধ করে রেখেছে সৃষ্টি সম্ভার। এভাবে স্বতন্ত্র উচ্চতায় আজ সাংবাদিক ওসমান গনি। তিনি ১৯৭৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার এক অজপাড়া মেহার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। স্থানীয় এলাকায় শিক্ষাজীবন শেষ করেন। নিজের পরিচয় দিতে গিয়েই হয়ত তিনি তার কবিতায় বলেছিলেন, আমি তো এসেছি ‘কমলার দীঘি’ ‘মহুয়ার পালা’ থেকে/ আমি তো এসেছি তিতুমীর আর হাজী শরীয়ত থেকে/ আমি তো এসেছি গীতাঞ্জলি ও অগ্নিবীণার থেকে/এসেছি বাঙালী ক্ষুদিরাম আর সূর্যসেনের থেকে/ এসেছি বাঙালী জয়নুল আর অবন ঠাকুর থেকে/ এসেছি বাঙালী রাষ্ট্রভাষার লাল রাজপথ থেকে/ এসেছি বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর থেকে/ আমি যে এসেছি জয়বাংলার বজ্রকণ্ঠ থেকে/ আমি যে এসেছি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে। তিনি তার লেখার প্রথম জীবনে ঢাকার কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার চান্দিনা উপজেলা প্রতিনিধি হিসাবে কাজ শুরু করেন। পরে তিনি আস্তে আস্তে ঢাকা ও ঢাকার বাহিরের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতার একজন নিয়মিত কলাম লেখক হয়ে ওঠেন। তার জীবনের একমাত্র নেশা ও পেশা হলো শুধুমাত্র লেখালেখি করা। যখনই তার সাথে দেখা হয় তখন দেখা যায় তার লেখার যন্ত্রটা (ল্যাপটপ) সামনে নিয়ে বসে আছেন। কেউ কোন কথা বলতে গেলে তিনি তেমন কোন সময় দিতে পারেন না। তার চিন্তা একটাই কখন লেখাটা শেষ করে পত্রিকা অফিসে ইমেল করবে। পর অপেক্ষায় বসে থাকেন কোন কোন পত্রিকায় তার লেখাটা প্রকাশ করছে। লেখা দেখার পর তার মনে শান্তি আসে। এর আগ পর্যন্ত একটা অস্তিরতার মধ্যে থাকেন। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কিছু লিখতে পারলেই তিনি নিজে কে ধণ্যমনে করেন। কারন তার উদ্দেশ্য হলো টাকার অভাবে যেহেতু তিনি মানুষের কোন সেবা করতে পারেন না তাই তিনি লেখার মাধ্যমে মানুষের জন্য কিছু করতে পারলেও জাতির কাছে তার কিছুটা ঋণ পরিশোধ হবে। এটাই হলো তার মূল উদ্দেশ্য।দেশের, সমাজের, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চলমান সমস্যাগুলো দেশের সচেতন মানুষের সামনে তুলে ধরেন।এতে করে দেশের,সমাজের ও মানুষের বিন্দুমাত্র হলেও উপকার হতে পারে। তার লেখার মাধ্যমে কোন মানুষের দেশের ও সমাজের নামমাত্র উপকার হলেও তার মনে শান্তি চলে আসে। তার লেখার মাধ্যমে দেশের গ্রাম-গঞ্জের অবহেলিত মানুষের জীবনমানের লেখাই বেশী থাকে। যাদের খবর দেশের সচেতন মহল বেশীর ভাগই রাখেন না। যারা রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত হয়ে থাকে। তার লেখক হয়ে ওঠার প্রেক্ষাপটটা, বলতে হবে, একটু ভিন্ন ছিল। লেখক হিসেবে তার ছিল হাজারো প্রতিবন্ধকতা। বিরুদ্ধ একটি সময়ের সঙ্গে তাকে লড়তে হয়েছে। তবে হাল ছাড়েননি। বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়েছেন। এভাবে আজকের সাংবাদিক ও কলামিস্ট ওসমান গনি। ছোটগল্প দিয়ে শুরু। তবে লেখক পরিচয়ে প্রথমত তিনি একজন সাংবাদিক। গত ৩০ডিসেম্বর এই স্বনামধণ্য লেখকের গ্রামের বাড়িতে ছোট পরিসরে তার জন্মদিন পালন করা হয়। ৩০ডিসেম্বর দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন থাকায় বড় করে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। তার আত্নীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের উপস্থিতিতে ঘরোয়া পরিবেশে জন্মদিন পালন করা হয়। সকলকে নিয়ে কেক কাটেন তারা। এ সময় ভক্তরা সুরে সুরে বলেন, হ্যাপি বার্থডে টু ইউ…। এর পর শুরু হয় ফুল দিয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা। উপস্থিত সকল বন্ধুরা জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান এবং দীর্ঘায়ু কামনা করেন। এদিন ৪৩তম জন্মদিনের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অনুষ্ঠানে ওসমান গনি বলেন,আমি আমার বয়স নিয়ে ভাবি না বয়স হয়েছে, আরও হবে, হোক। সে নিয়ে ভাবি না। লেখা আমার, পেশা, নেশা ও প্রেম। শেষ দিনটি পর্যন্ত লিখে যেতে চাই। লেখালেখিটা রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে। এ নিয়ে থাকতে চাই বাকি দিনগুলো। শুভেচ্ছা জানাতে আসা সুধীজনদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। জন্মদিনের এই দিনে চঞ্চলা মন ষোড়ষী সাজ; বাঁধন কাটার সুর-দিচ্ছে উড়াল দূর। নিজের মতো নিজের কাজে কষ্ট অনেক, দুঃখ মাঝে; লাগুক ছটা আলোয়–মন্দ কাটুক ভালোয়। দুর চিঠিতে সুবাস পাঠাই ভালো থাকবেন এই আমার কামনা।

পিবিএ/এসএ/এফএস

আরও পড়ুন...