পিবিএ ডেস্ক: শিশুদের শিক্ষা যেমন জরুরি, তেমনি জরুরি শারীরিকভাবে তাদের শিক্ষিত করে তোলা। অর্থাৎ, শিশুদের পরিশ্রমে সক্ষম করো তোলার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ কাজে আপনি আপনার সন্তানকে সুইমিং পুলে নিয়ে যান বা মাঠে খেলাধুলা করতে নিয়ে যান। তাদের ভবিষ্যতে পরিশ্রমী করে গড়ে তুলতে এর বিকল্প নেই। কায়িক শ্রমের অভাবে নানা রোগে আক্রান্ত হয় প্রযুক্তির যুগের শিশুরা। বিশেষজ্ঞরা বলেন, আধুনিক যুগের শিশুরা বাইরে খেলতে যেতে চায় না। তারা সারাদিন কম্পিউটার বা স্মার্টফোন বা ট্যাবেই ব্যস্ত থাকে। শ্রম দিতে হয় এমন যেকোনো কাজে তারা খুবই দুর্বল। তারা দৌড়ানোর কৌশল জানে না, তারা গাছে উঠতে পার না। নড়াচড়ার মৌলিক শিক্ষা থেকে তারা দারুণভাবে বঞ্চিত। শারীরিকভাবে ভবিষ্যত প্রজন্ম শিক্ষিত না হলে দৈহিক ও মানসিকভাবে তারা অসুস্থ হয়ে থাকবে। দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা জর্জরিত হয়ে দিন কাটাতে হবে তাদের। অস্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধি, পড়াশোনায় অমনোযোগিতা এবং অন্যান্য পারফরমেন্সের ক্ষেত্রে তারা ক্রমশ পিছিয়েই পড়বে। বিশেষ করে স্থূলতা তাদের মারাত্মক সমস্যা হয়ে দেখা দেয়। উন্নত দেশের স্কুলব্যবস্থা, ফিটনেস সংস্থা, জাতীয় ক্রীড়া সংস্থা এবং হেলথ কেয়ার সেন্টারগুলো তাই শিশুদের দৈহিক শিক্ষা প্রদানের বিষয়ে বিশেষ সচেতনতা গড়ে তোলে। আপনিও আপনার শিশুকে এ শিক্ষা প্রদান থেকে দূরে থাকবেন না। জীবনে উদ্যমী ও পরিশ্রমী করে গড়ে তুলতে ৩টি কার্যকর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
১. পরিশ্রমী হওয়ার মডেল স্থাপন করুন : বাবা-মায়ের এদিক থেকে দায়িত্বশীলতা রয়েছে। বিশেষ করে গ্রীষ্ম বা শীতে বিশেষ আয়োজনে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করুন। এ ক্ষেত্রে আপনি রোল মডেল হয়ে উঠতে পারেন। নিজে আয়েশের সঙ্গে চেয়ারে বসে তাদের বাইরে খেলতে যেতে বলা মোটেও উচিত নয়। আপনি নিজেও মাঠে চলে যান। তার সঙ্গে খেলাধুলা করুন। সকালে তাকে নিয়ে হালকা দৌড়ঝাঁপ করুন। সব ধরনের কায়িক শ্রমে নিজে উৎসাহী থাকুন। তবেই আপনার শিশু একই কাজে উৎসাহী হবে। নিজের প্রাত্যাহিক জীবনযাপনে পরিশ্রমী থাকার বিষয়টি শিশুর কাছে স্পষ্ট করুন। এতে উদ্দীপ্ত হয়ে তারাও আপনার মতো পরিশ্রমী হতে চাইবে।
২. বিভিন্ন ধরনের খেলায় উৎসাহ দিন : কেবলমাত্র একটি-দুটি বিষয়ে নয়, তাকে যাবতীয় খেলাধুলায় অনুপ্রেরণা জোগান। স্কুলের ফুটবল দলে নাম লিখিয়ে দিন। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ বাধ্যতামূলক করে দিন। তারা সাঁতার কাটবে, ক্রিকেট খেলবে, দৌড়ে অংশ নেবে, হাই জাম্প বা লং জাম্প প্রতিযোগিতায় নাম লেখাবে। যদিও এতে আঘাত পাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু মৌলিক শিক্ষা পেলে তারা সয়ে উঠবে। দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলার শিক্ষাও নিশ্চিত করতে হবে।
৩. পরামর্শদাতা হয়ে উঠুন : যে পরিবেশ বা প্রতিষ্ঠানে আপনার শিশুর এসব কাজের সুযোগ নেই, সেখানে কথা বলুন। তাদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিন। প্রয়োজনে যেখানে এমন ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে তাকে ভর্তি করিয়ে দিন। শিশুদেরও একই বিষয়ে পরামর্শ দিন। খেলার মাঠে যে শিশুরা বেঞ্চে বসে খেলা দেখে, তাদের দলে ভেড়াবেন না শিশুকে। তার মনে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন বুনে দিন। তাকে শারীরিকভাবে শিক্ষিত করে তুলুন। এর সুফল বাকি জীবনেও মিলতে থাকবে।
পিবিএ/ইকে