আবরার হত্যার প্রতিবাদে

সাত সকালে হঠাৎ ছাত্রশিবিরের মিছিল

শিবিরের মিছিল
আবরার হত্যার প্রতিবাদে সকালে শিবিরের মিছিল

পিবিএ, ঢাকা: ভারত বিরোধী ফেসবুকে পোষ্ট দেয়ায় ছাত্রলীগের হাতে নির্মমভাবে নিহত বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের খুনিদের ফাঁসির দাবিতে বুধবার সকালে রাজধানীর ভাটারায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ব্যানারে।

প্রগতি সরণিতে বুধবার সকাল ৮টার দিকে ইসলামী ছাত্র শিবিরের ঢাকা মহানগর উত্তরের ব্যানারে রাজপথ অবরোধ করে ওই বিক্ষোভ মিছিল হয়।

মিছিলটি কুড়িল বিশ্বরোডে গিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত সভার পর শেষ হয়। এতে বক্তারা বলেন, দেশের সম্পদ রক্ষার কথা বলায় দেশসেরা শিক্ষার্থীকে যেভাবে পিটিয়ে মারল ছাত্রলীগ, তাতে বোঝা যায় দেশ এখন কাদের দখলে।

তারা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে খুনিদের বিচারের দাবি জানান। এ সময় রামপুরা-বিমানবন্দর সড়কে প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়।

বক্তারা আরও বলেন, ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন। ক্লাসে প্রথম ছাড়া দ্বিতীয় হননি। আবরার ফাহাদ ২০১৫ সালে কুষ্টিয়া জেলা স্কুল বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন ‘এ’ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

পরে এইচএসসি বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন ঢাকা নটর ডেম কলেজে। সেখান থেকে ২০১৭ সালে এইচএসসি পরীক্ষাতেও গোল্ডেন ‘এ’ প্লাসসহ উত্তীর্ণ হন।

পরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স বিভাগে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন। ফাহাদ সেখানে শেরেবাংলা হলের ১০১১নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।

রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ২০১১নং কক্ষে মদ পান করে ছাত্রলীগের হিংস্র হায়নারা ৬ ঘণ্টা ধরে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে দেশপ্রেমী এই মেধাবী ছাত্রকে।

এদিকে আবরার নিহতের ঘটনায় তার বাবা মো. বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ৭ অক্টোবর রাজধানীর চকবাজার থানায় মামলাটি করেন। মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হলেও আরও অজ্ঞাতনামাদেরও আসামি করা হয়।

এ ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় ১৪ জন জড়িত বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায়।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বুয়েট শাখার সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ জনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

চকবাজার থানায় করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী ছাত্রলীগের ১০ নেতাকর্মীর প্রত্যেককে ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন— বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেল, সহ-সভাপতি মুস্তাকিম ফুয়াদ, সহ-সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু, উপ-দফতর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, উপ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, ক্রীড়া সম্পাদক সেফায়েতুল ইসলাম জিওন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, গ্রন্থনা,গবেষণা সম্পাদক ইশতিয়াক মুন্না ও খন্দকার তাবাখ্খারুল ইসলাম তানবির।

পিবিএ/পিএস/জেডআই

আরও পড়ুন...