যেভাবে ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসার লাইসেন্স করবেন

যেভাবে ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসার লাইসেন্স করবেন

পিবিএ ডেস্কঃ মানুষের যতগুলো শখ বয়েছে তার মধ্যে ট্রাভেল তথা নতুন নতুন জায়গা, দেশ, বিভিন্ন প্রাচীন স্থাপনা, সাগর, নদী, পাহাড়, প্রকৃতিতে ঘুরে বেড়ানো অন্যতম। এ ছাড়া কাজের প্রয়োজনেও মানুষকে বিভিন্ন স্থানে যেতে হয়। এক্ষেত্রে তাদের কারো না কারো সহযোগিতার প্রয়োজন হয়।

এই ভ্রমণপ্রিয় এবং কাজের প্রয়োজনে নানা স্থানে যাওয়া মানুষগুলোকে অর্থের বিনিময়ে যেসব প্রতিষ্ঠান সহযোগিতা করে থাকে তাদের বলা হয় ট্রাভেল এজেন্সি। যেকেউ চাইলেই ট্রাভেল এজেন্সি চালু করতে পারে না। ট্রাভেল এজেন্সি চালুর পূর্বে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়।

আগ্রহী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে নির্ধারিত কোডে আবেদন ফি জমা দিয়ে ট্রেজারি চালানের কপি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নির্ধারিত ফরমে মন্ত্রণালয়ে আবেদন দাখিল করা হলে তা ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সঠিকতা যাচাই বাছাই করা হয়।

কাগজপত্র সঠিক থাকলে সরকার নির্ধারিত রেজিস্ট্রেশন ফি ও ভ্যাট জমা প্রদানের জন্য ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে দাবিপত্র জারি করবে। ট্রেজারি চালানের মূলকপি প্রাপ্তির পর তা অন-লাইনে যাচাই করে নিশ্চিত হতে হবে। নিশ্চিত হওয়ার পর এজেন্সির অনুকূলে ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন সনদ জারি করা হয়।

সেবার ক্যাটাগরি: নাগরিক সেবা, মন্ত্রণালয়: বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর: বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, যোগ্যতা: বাংলাদেশী নাগরিক। সেবা প্রাপ্তির সময়: ৪৫ কার্যদিবস। আবেদনের সময়: বছরের যেকোন সময়।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: ১। যথাযথভাবে পূরণকৃত নির্ধারিত ফরমে আবেদন; ২। আবেদন ফরমের সাথে নিম্নবর্ণিত কাগজপত্র দাখিলঃ (ক) আবেদন ফি জমার ট্রেজারি চালানের মূলকপি; (খ) হালনাগাদ ট্রেডলাইসেন্সের সত্যায়িত অনুলিপি; (গ) টিআইএন সনদ; (ঘ) ব্যবসায়িক ঠিকানার সমর্থনে হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ/বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র ও ভাড়া পরিশোধের রশিদ;

(ঙ) লিমিটেড কোম্পানি/ অংশীদারী প্রতিষ্ঠান হলে সার্টিফিকেট অব ইনকর্পোরেশন-এর সত্যায়িত অনুলিপি, আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন/অংশীদারী চুক্তি; (চ) ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্টাম্পে হলফনামা; (ছ) নূন্যতম ১০ (দশ) লক্ষ টাকা স্থিতির ব্যাংক সার্টিফিকেট; (জ) রেজিষ্ট্রেশন ফি ও ভ্যাট জমার ট্রেজারি চালানের মূল কপি

প্রয়োজনীয় খরচ: ১। আবেদন ফি বাবদ ৫,০০০/- টাকা ১-৫৩০১-০০০১-১৮১৬ নং কোডে “বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়-সচিবালয়-সচিবালয় ফার্মস এন্ড কোম্পানীজ রেজিস্ট্রেশন ফিস”-এর অনুকূলে;

২। রেজিষ্ট্রেশন ফি বাবদ ৫০,০০০/- টাকা ১-৫৩০১-০০০১-১৮১৬ নং কোডে “বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়-সচিবালয়-সচিবালয় ফার্মস এন্ড কোম্পানীজ রেজিস্ট্রেশন ফিস”-এর অনুকূলে; এবং ভ্যাট বাবদ-৭,৫০০/- টাকা ১-১১৩৩-০০১০-০৩১১ নং কোডে ট্রেজারি চালানমূলে বাংলাদেশ ব্যাংক/সোনালী ব্যাংকে জমা দিতে হবে।

ট্রাভেল এজেন্সীর লাইসেন্স সংগ্রহের পূর্বে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করবেন যেভাবে: ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা পরিচালনা করা আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ। যে কোনো ব্যবসা করতে হলে আগে ট্রেড লাইসেন্স নিতে হয়। ১৯৮৬ সালের মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন ট্যাক্সেশন বিধিমালার ৪৪(১) বিধি অনুসারে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাইলে অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স নিতে হবে।

একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নানা কাজে লাগে এই লাইসেন্স। যেমন- ব্যাংক ঋণ নিতে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব খুলতে, ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে ব্যবসায়ীর বিদেশে যেতে ইত্যাদি কাজে ট্রেড লাইসেন্স অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। অন্যদিকে এটা সিটি কর্পোরেশনের জন্য একটা রাজস্ব খাত। সিটি কর্পোরেশন ছাড়াও পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করা হয়। আসুন এবার জেনে নেই কীভাবে এই লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হয়।

যোগ্যতা: নারী-পুরুষ উভয়ই ট্রেড লাইসেন্স করতে পারবে। অবশ্যই তাকে কোনো না কোনো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকতে হবে। আর বয়স ১৮ বছরের উপরে হতে হবে।

আবেদন ফরম সংগ্রহ: ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহের জন্য দুটি ভিন্ন ধরনের ফরম রয়েছে। ফরমগুলো ‘আই ফরম’ ও ‘কে ফরম’ নামে চিহ্নিত প্রতিটি ফরমের দাম ১০ টাকা। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যদি ছোট বা সাধারণ হয়, তবে ‘ফরম আই’ আর বড় ব্যবসার ক্ষেত্রে ‘কে ফরম’ নিতে হয়। উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পাঁচটি এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পাঁচটি অঞ্চল রয়েছে। আপনার প্রতিষ্ঠানটি যে অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত, ওই অঞ্চলের অফিস থেকেই লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে।

লাইসেন্স ফি: সিটি কর্পোরেশনের দ্বারা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তদন্ত হতে পারে এবং এই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট পরিমাণ লাইসেন্স ফি পরিশোধের মাধ্যমে আপনাকে লাইসেন্স দেয়া হবে। সাধারণত লাইসেন্স ফি সর্বনিু ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ২৬ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আকার বা ধরন অনুযায়ী এই ফি নির্ধারণ করা হয়।

লাইসেন্স নবায়ন: প্রতিটি ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ থাকে ১ বছর। ১ বছর পর সেটি আবার নবায়ন করতে হয়। খেয়াল করে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করতে হবে। এ জন্য বর্তমান ট্রেড লাইসেন্সসহ আঞ্চলিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। লাইসেন্স নবায়ন ফি’র পরিমাণ নতুন লাইসেন্স ফি’র সমান হয় এবং ফি জমাদানের ব্যাংকের নাম ফরমে উল্লেখ করা থাকে।

প্রয়োজনীয় তথ্য সংযোজন: ট্রেড লাইসেন্সের আবেদন করলে প্রথমে প্রতিষ্ঠানের একটি নাম প্রস্তাব করা হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তখন দেখেন ওই নাম কাউকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে কিনা? বরাদ্দ দেয়া না হয়ে থাকলে ওই নামে লাইসেন্স দেয়া হয়। ট্রেড লাইসেন্স আবেদন ফরমে দেয়া তথ্যগুলো প্রদান করতে হয়।

সংযুক্ত কাগজপত্র: ট্রেড লাইসেন্স আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হয়।সাধারণ ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্সের ক্ষেত্রে: দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, নিজের দোকান হলে ইউটিলিটি বিল এবং হালনাগাদ হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের ফটোকপি। আবেদনকারীর ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি। ব্যবসা যদি যৌথভাবে পরিচালিত হয় তাহলে ১৫০/৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে পার্টনার শিপের অঙ্গীকারনামা/শর্তাবলী জমা দিতে হবে।

দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা: ১. (ঢাকা-প্রতিষ্ঠানের নামের A আদ্যক্ষর-এর ক্ষেত্রে) সিনিয়র সহকারী সচিব পর্যটন-২ শাখা ফোনঃ +৮৮০-২-৯৫৪০৮৩৯ ই-মেইলঃ tourism2@mocat.gov.bd ২. (ঢাকা- প্রতিষ্ঠানের নামের B, H আদ্যক্ষর-এর ক্ষেত্রে) উপসচিব প্রশাসন-১ অধিশাখা ফোন: +৮৮০-২-৯৫৪৫৮৩৫ ইমেইলঃ admin1@mocat.gov.bd

৩. (ঢাকা- প্রতিষ্ঠানের নামের I আদ্যক্ষর-এর ক্ষেত্রে) উপসচিব বাজেট অধিশাখা ফোন: +৮৮০-২-৯৫৪০৯৮২ ইমেইলঃ budget@mocat.gov.bd ৪. (ঢাকা- প্রতিষ্ঠানের নামের C, D, E, F, G আদ্যক্ষর-এর ক্ষেত্রে) সামিহা ফেরদৌসী সিনিয়র সহকারী সচিব পর্যটন-১ শাখা ফোন : +৮৮০-২-৯৫৬৮৪০৪ ইমেইল:tourism1@mocat.gov.bd ৫. (ঢাকা- প্রতিষ্ঠানের নামের J, K আদ্যক্ষর-এর ক্ষেত্রে) সিনিয়র সহকারী প্রধান’।

পিবিএ/এমআর

আরও পড়ুন...