পিবিএ ডেস্ক: ভয়ংকর দুই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় ও ভূমিকম্পের মিশ্রণ আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঝড়কম্প’। ঘূর্ণিঝড় ও ঝড়ের সময় সমুদ্রতলের ঝাঁকুনি সাড়ে ৩ মাত্রার ভূমিকম্পের কম্পনের মতো হতে পারে এবং তার স্থায়ীত্ব হতে পারে কয়েক দিন। এ কম্পনগুলো প্রায়ই ঘটে থাকলেও, আগে নজরে আসেনি।
চলতি সপ্তাহের জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ও ঝড়ের সময় সমুদ্রতলের ঝাঁকুনি সাড়ে ৩ মাত্রার ভূমিকম্পের কম্পনের মতো হতে পারে এবং তার স্থায়ীত্ব হতে পারে কয়েক দিন। এ কম্পনগুলো প্রায়ই ঘটে থাকলেও, আগে নজরে আসেনি। এতোদিন বিষয়টিকে মনে করা হতো ভূকম্পের পটভূমির সমস্যা হিসেবে।
গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির ভূকম্পনবিদ ওয়েনইওয়ান ফ্যান বলেন, ঝড়কম্প এক উদ্ভট বিষয়। তবে এটি এমন কিছু নয় যা আপনার ক্ষতি করতে পারে। কারণ, ঘূর্ণিঝড়ের সময় তো আর কেউ সমুদ্রতলে দাঁড়িয়ে থাকেন না। বাস্তব ও ভয়ংকর এ বিষয়টি সম্পর্কে সাংবাদিকদের ফ্যান জানান, এটি নিয়ে জনসাধরণের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো দরকার নেই। তিনি বলেন, ঝড়ের ফলে সমুদ্র দানবীয় ঢেউ সৃষ্টি হয়, যা আরেক ধরনের ঢেউ তৈরি করে। দ্বিতীয় ধরনের ঢেউগুলো পরে নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় সমুদ্রতলে আঘাত হানে এবং এতে ঝাঁকুনি তৈরি হয়। যেখানে বিশাল মহাদেশীয় ঢাল ও অগভীর সমতল ভূমি আছে সেখানেই শুধুমাত্র এটি হয়।
ফ্যান জানান, তার দল ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেক্সিকো উপসাগর ও ফ্লোরিডা উপকূল, নিউ ইংল্যান্ড, নোভা স্কটিয়া, নিউফাউন্ডল্যান্ড, ল্যাব্রাডোর ও ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় ১৪ হাজার ৭৭টি ঝড়কম্প পেয়েছে।
২০০৮ সালের ঘূর্ণিঘড় ইক এবং ২০১১ সালের ঘূর্ণিঝড় আইরিনের ফলে অনেকগুলো ঝড়কম্প সৃষ্টি হয় বলে গবেষণাটিতে বলা হয়েছে। এ ধরনের ঝাঁকুনিগুলো এমন তরঙ্গ তৈরি করে যা ভূকম্পনবিদরা ভূমিকম্প নজরদারি করার সময় সাধারণত নজরে আনেন না। যে কারণে এগুলো এত দিন আড়ালে থেকে গিয়েছিল, বলেন ফ্যান।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) ভূকম্পনবিদ পল আর্ল বলেন, ‘‘সমুদ্র-সৃষ্ট ভূকম্পন তরঙ্গ ইউএসজিএসের যন্ত্রপাতিতে ধরা পড়ে। কিন্তু আমাদের ভূমিকম্প অনুসন্ধানের মিশনে এসব তরঙ্গকে পটভূমির গোলমাল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।’’