পেটের মধ্যেই তৈরি হচ্ছে মদ!

পিবিএ ডেস্ক: পেটের মধ্যে মদ তৈরির আজব এক অসুখ হয়েছে তা কে জানত! মদ্যপান করে রাস্তায় গাড়ি চালানোর অভিযোগে মার্কিন পুলিশের কাছে ধরা পড়ে তাই নিজেই বিস্মিত হয়েছিলেন এক ব্যক্তি! কারণ, তিনি তো মদ ছুঁয়েও দেখেন না। কিন্তু, পুলিশকে তো সেকথা বিশ্বাস করানো যাবে না। কারণ, ব্রেদালাইজার টেস্টে দেখা গেছে, ড্রিংক-ড্রাইভ লিমিটের পাঁচ গুণ বেশি মদ্যপান করেছেন তিনি। অগত্যা, যে শাস্তি প্রাপ্য, তাই পেতে হল। ঘটনাটি ২০১৪ সালের।

বছর ছেচল্লিশের ওই ব্যক্তির বক্তব্য, শুধু পুলিশ কেন, পরিবারও তাকে কখনও বিশ্বাস করতে চায়নি। পরিবারের বদ্ধমূল ধারণা ছিল, তিনি লুকিয়ে মদ্যপান করেন। সন্দেহের আরো কারণও ছিল। বেসামাল শরীর, ঝিম মেরে থাকা… নেশার যাবতীয় লক্ষণই ছিল তার মধ্যে। তিনি নিজেও ভেবে পেতেন না, কেন এমনটি হচ্ছে।

ঘটনার তিন বছর পর, ২০১৭ সালে মেডিক্যাল পরীক্ষায় ধরা পড়ে তিনি অদ্ভুত এক অসুখের শিকার! তার পেটের মধ্যেই অনবরত তৈরি হচ্ছে বিয়ার। কারণ, তার অন্ত্রে বাসা বেঁধেছে ব্রুয়ার ছত্রাক। বিশেষ ধরনের ওই ছত্রাকের উপস্থিতিতেই পেট ভরে যাচ্ছে বিয়ারে। ব্রুয়ার ইস্ট বা ছত্রাকই কার্বোহাইড্রেটকে অ্যালকোহলে রূপান্তর করছে।

মেডিক্যাল পরিভাষায় এ অসুখকে বলা হয়, অটো-ব্রুয়ারি সিনড্রোম। অসুখটি চিহ্নিত করেন নিউ ইয়র্কের রিচমন্ড ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টারের চিকিত্সকরা। বিএমজে ওপেন গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজির এই কেস স্টাডি রিপোর্টটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। চিকিত্সকদের ধারণা, কোনও অ্যান্টিবায়োটিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকেই এই সিনড্রোমের শিকার ওই ব্যক্তি। গত কয়েক বছর ধরেই তিনি ভুগছেন। হারিয়ে যাচ্ছে স্মৃতিশক্তি। চাকরিও ছাড়তে হয়েছে।

চিকিৎসা করতে গিয়ে ডাক্তাররা জানতে পারেন, বেশির ভাগ সময় ওই ব্যক্তি কার্বোহাইড্রেট-প্যাকড খাবার কিনে খেতেন। এ ধরনের খাবারে তার রক্তে অ্যালকোহলের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যায়। কেস স্টাডি করতে গিয়ে ডাক্তাররা জানতে পারেন, ২০১১ সালে বুড়ো আঙুলে চোটের চিকিত্সা করাতে গিয়ে, ডাক্তারের প্রেসক্রাইব করা অ্যান্টিবায়োটিক খেয়েছিলেন। সেই অ্যান্টিবায়োটিক থেকেই এই পরিণতি হয়েছে বলে ডাক্তাররা দাবি করছেন।

পিবিএ/বাখ

আরও পড়ুন...