খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নেয়া না নেয়ার সিদ্ধান্ত আদালতের : তথ্যমন্ত্রী

পিবিএ,ঢাকা: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নেয়া না নেয়ার সিদ্ধান্ত আদালতের, সরকারের নয়। তার স্বজনরা দেখা করে এসে দুই সপ্তাহ ধরে কোনো চিকিৎসক খালেদা জিয়াকে দেখতে যাননি বলে যে অভিযোগ তুলেছেন- তা সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

ঐক্যফ্রন্টের অবস্থা দেখে হাসি পায় : তথ্যমন্ত্রী

তিনি বলেন, গতকালও (শুক্রবার) রিজভী আহমেদ সংবাদ সম্মেলন করে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হচ্ছে না বলে বলেছেন। আসলে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য ও খালেদা জিয়ার বোনসহ আত্মীয়-স্বজনরা দেখা করে এসে যা বলেছেন তাদের বক্তব্যের মধ্যে পুরোপুরি মিল, কোনো ব্যতিক্রম নেই। এ সব বলে তারা খালেদা জিয়ার জন্য সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছেন। এটি করতে গিয়ে বিএনপি নেতারা বরং বেগম জিয়াকে অসম্মানিত করছেন।

শনিবার বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজি পুকুরপাড়ে নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ সব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে হলে তাকে তো প্রথমত জামিন পেতে হবে। জামিন পাওয়ার পর আবার আদালতের অনুমতি লাগবে তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া যাবে কিনা। সেটা তো আদালতের ব্যাপার। তিনি জামিন পাবেন কি পাবেন না সেটা সরকারের বিষয় নয়, আদালতের ব্যাপার। আদালত যদি তাকে জামিন দেন এবং বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার অনুমতি দেন তাহলেই বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার প্রসঙ্গটি আসে। এটা সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ার।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতপক্ষে আমি বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি তারা জানিয়েছেন- বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়মিত ডিউটি ডাক্তারের চেকআপের মধ্যে রেখেছেন। এ ছাড়াও সিনিয়র ডাক্তাররা তাকে এক-দু’দিন পরপর দেখতে যান এবং তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন খালেদা জিয়ার আর্থাইটিসের সমস্যা দীর্ঘদিনের পুরনো সমস্যা। এগুলো নতুন সমস্যা নয়। এ সমস্যা নিয়েই তিনি দু’বার দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। বিএনপির মতো একটি বড় দলের চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করছেন। বিরোধীদলের নেতার দায়িত্বও তিনি পালন করেছেন। মানুষের বয়স বাড়লে সব মানুষের আর্থাইটিসের মতো নানা সমস্যা হয়। তার নতুন করে কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি। গতকালকে (শুক্রবার) আত্মীয়-স্বজনরা দেখা করে এসে যে কথাগুলো বলেছেন সেগুলো নতুন কোনো সমস্যা নয়, পুরনো সমস্যা। তারা যে সব কথা বলেছেন- তা সঠিক নয়। তাকে নিয়মিত চেকআপে রাখা হয়েছে, সিনিয়র ডাক্তাররা দুয়েকদিন পরপর দেখতে যাচ্ছেন।

দেশের মেডিকেল শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালে দেশের প্রতিথযশা ডাক্তাররা সংযুক্ত রয়েছেন উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এখানে মানসম্মত চিকিৎসা হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যখন জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তখন সেখানেই চিকিৎসা নিয়েছেন। সিঙ্গাপুর ও ভারতের দেবী শেঠিসহ বিখ্যাত ডাক্তাররা এসেছিলেন, তারা বলেছিলেন ভারত ও সিঙ্গাপুরে নিয়ে গেলে তাকে যে চিকিৎসা দেয়া হতো বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে সেই চিকিৎসায় দেয়া হয়েছে। যে কারণে তিনি মৃত্যুরসন্ধিক্ষণ থেকে ফিরে আসেন। এখানেই ভালো চিকিৎসা হয়।

বেগম খালেদা জিয়া দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তার সুচিকিৎসার জন্য সরকার অত্যন্ত আন্তরিক বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশে আরও অনেক হাসপাতাল ছিল। তিনি যাতে ভালো চিকিৎসা পান সে জন্যই দেশের সেরা হাসপাতাল বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে রাখা হয়েছে তাকে।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে যদি খালেদা জিয়ার চিকিৎসা না হয়, তাহলে তাকে যখন কারাগারে ফেরত নেয়ার কথা আসে তখন রিজভী আহমেদরা বিরোধিতা করেন কেন? এমন প্রশ্ন রেখে হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়ার স্বজনরা জামিনপ্রাপ্তিতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন। দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে (খালেদা জিয়া) কী সরকার সহায়তা করবে?

তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) একবার বলে আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে। আবার কেউ বলছেন, তার জামিন আবেদনের সময় যাতে বিরোধিতা করা না হয়। তাদের পুরো বক্তব্য স্ববিরোধী। সরকারের তো দুর্নীতির সঙ্গে আপস করার সুযোগ নেই।

পিবিএ/ইকে

আরও পড়ুন...