স্বল্প সময়ে ধান শুকাবে যন্ত্র

স্বল্প সময়ে ধান শুকাবে যন্ত্র

পিবিএ ডেস্কঃ বৃষ্টির কারণে বোরো মৌসুমে ধান শুকানো কষ্টসাধ্য ব্যাপার। শীত মৌসুমেও প্রয়োজনমতো পাওয়া যায় না রোদ। এ ছাড়া বর্তমানে কৃষকের বাড়ির উঠানের জায়গাও কমে এসেছে। এসব কারণে ঠিকমতো ধান শুকাতে না পারায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় কৃষকদের। এই সমস্যার সমাধান করতে পারে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) দুই গবেষকের উদ্ভাবিত ধান শুকানোর যন্ত্র ‘বিএইউ-এসটিআর ড্রায়ার’। এই যন্ত্রের মাধ্যমে ধানের আর্দ্রতা প্রতি ঘণ্টায় ২-৩ শতাংশ কমানো সম্ভব।

বাকৃবির গবেষক ড. মো. মঞ্জুরুল আলম ও ড. চয়ন কুমার সাহা পাঁচ বছরের প্রচেষ্টায় এই যন্ত্রটি উদ্ভাবন করেছেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়টির কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক। তাদের দাবি, প্রতিকূল পরিবেশে ধান শুকানো ও কর্তনোত্তর অপচয় কমাতে সক্ষম এই যন্ত্র।

কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণে বিএইউ-এসটিআর ড্রায়ার নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

উদ্ভাবকরা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা ফিড দি ফিউচার, ইউএসএইড ও এডিএমআইর অর্থায়নে এবং কানসাস স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় ও ইলিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ ব্যবস্থাপনায় এই যন্ত্রটি তৈরি করা হয়েছে। এটি দিয়ে প্রতি ব্যাচে ৫০০ কেজি ধান শুকাতে মাত্র ৪-৫ ঘণ্টা সময় লাগবে। প্রতি কেজি ধান শুকাতে খরচ পড়বে ৭৪ পয়সা (বিদ্যুৎচালিত) ও ৮৭ পয়সা (ডিজেলচালিত)। এতে রোদে শুকানোর চেয়ে প্রায় ২৬ শতাংশ কম খরচ পড়বে। উদ্ভাবক মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘প্রকল্পটির প্রথম পর্যায়ে আমরা পরীক্ষামূলকভাবে ময়মনসিংহের শ্যামগঞ্জের মতি অটো রাইস মিলে যন্ত্রটির সফল ব্যবহার শুরু করি। পরে নেপালের এক বিজ্ঞানীর কাছে ২টি ও ভারতের বিহারে ১টি ড্রায়ার পাঠাই। এ ছাড়াও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে আমরা ১৮৪টি ড্রায়ার মাঠ পর্যায়ে দিই। দুই বছরের মধ্যে আরও দুই হাজার ড্রায়ার আমরা মাঠ পর্যায়ে দিতে পারব।’

দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৬২ শতাংশ কৃষি খাত সংশ্লিষ্ট। কৃষির এমন যান্ত্রিকীকরণের ফলে মানুষ কর্মসংস্থান হারাবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে উদ্ভাবক চয়ন কুমার সাহা বলেন, ‘আমি মনে করি, এতে আরও কর্মসংস্থান বাড়বে। একটি যন্ত্র যখন উদ্ভাবিত হয়, তখন তা বাজারজাতকরণ, পরিচালনা, প্রশিক্ষণ, মেরামতে অধিক জনবল প্রয়োজন হয়। ফলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’

উদ্ভাবকরা জানান, ২০১৫ সালের মার্চে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায় শেষ হয় গত বছরের ডিসেম্বরে। বিএডিসির সহায়তায় প্রকল্পটির দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারিতে আর শেষ হবে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে।

পিবিএ/এমআর

আরও পড়ুন...