পিবিএ,শেরপুর :শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে জবাই করে কিশোর সোহাগ মিয়ার (১৭) হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রধান আসামী সুমন (২০) ও তার সহযোগী দুই,আসামীসহ মোট ৪ জনকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
সোহাগের হারিয়ে যাওয়া মোবাইলফোন ট্রেকিং করে গতকাল শুক্রবার সকালে পৃথক অভিযান চালিয়ে ঢাকার ডেমরা ও নালিতাবাড়ী থেকে তাদের আটক করা হয়।
শনিবার (১৯ জানুয়ারী) দুপুরে আটককৃতদের নিয়ে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থলের পাশে ধরা
খাল থেকে জবাই কাজে ব্যবহৃত এন্টিকাটার (কাগজ কাটার চাকু) উদ্ধার করার পর বিকেলে শেরপুর আদালতে সোপর্দ করেছে। সোহাগ নালিতাবাড়ীউপজেলার উত্তরসন্নাসীভিটা গ্রামে গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে এবং পেশায় একজন ট্রলির হেলপার ছিল ।
পুলিশ জানায়, সোহাগের কাছে থাকা একটি স্মার্ট ফোন ছিনিয়ে নিতে উপজেলার দোহালিয়া গ্রামের মৃত হেলাল মিয়ার ছেলে সুমন (২০), পাঁচগাঁও গ্রামের মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান (১৯) ও সন্নাসীভিটা গ্রামের ইন্তাজ আলীর ছেলে মনির (১৮) পরিকল্পনা করে। এরা তিনজনই মাদকাসক্ত। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৪ জানুয়ারী তিন বন্ধু মিলে পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সোহাগকে ফোনে ডেকে
সন্নাসীভিটা বাজারে আনে। পরে এখান থেকে বিড়ি খাওয়ার কথা বলে সোহাগকে সন্নাসীভিটা উত্তরবন্দের ধান ক্ষেতে নিয়ে বিড়ি খায় এবং কিছুক্ষণ গল্প করে। একপর্যায়ে তারা সোহাগের কাছে থাকা স্মার্ট ফোনটি নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় সোহাগ তা না দিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলে মেহেদী ও মনির সোহাগকে ঝাপটে ধরে এবং সুমন প্যান্টের পকেট থেকে চাকু বের করে সোহাগের গলায় ধরে মোবাইলটি কেড়ে নিতে চায়। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে গলায় আঘাত লাগলে সোহাগ গোঙ্গানি শুরু করে ও মাটিতে পড়ে যায়। এসময় মেহেদী এবং মনির সোহাগের পা ও মাথা চেপে ধরে ধানক্ষেতে শোয়ায়। পরে সুমন সোহাগকে জবাই করে মৃত্যু নিশ্চিত করে ও মোবাইল ফোনটি নিয়ে চলে আসে। রাতেই সুমন উপজেলার তিনানী বাজার থেকে বাসে ঢাকায় চলে যায় এবং পরদিন রুমমেট ও গার্মেন্ট শ্রমিক পাঁচগাঁও গ্রামের ইমান আলীর ছেলে জসিমের (২০) কাছে ৩ হাজার টাকায় ফোনটি বিক্রি করেদেয়।
এদিকে পরদিন ১৫ জানুয়ারী সোহাগের মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ মোবাইল ট্রেকিং শুরু করে এবং ব্যবহৃত সীমের নিবন্ধন অনুযায়ী একজনকে আটক করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শুক্রবার সকালে সীমের ব্যবহারকারী ডেমরায় অবস্থানকারী জসিমের কাছে পৌছায় পুলিশ। জসিমের কাছে বিক্রেতা সুমনের নাম জেনে একই স্থান থেকে তাকেও আটক করে। পরে সুমনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই সময়ে পৃথক অভিযান চালিয়ে নালিতাবাড়ীর পাঁচগাঁও থেকে মেহেদী ও সন্নাসীভিটা থেকে মনিরকে আটক করা হয়।
নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের জানান, শনিবার হত্যায় ব্যবহৃত এন্টিকাটার (কাগজ কাটার চাকু)
উদ্ধার করা হয়েছে বিকেলে আসামীদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তারা ১৬৪ ধারায় সুমনকে হত্যার বিবরণ দিয়ে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে।
পিবিএ/ এস এম/ ইএইচকে