সেই রাতে ১১ জন সরাসরি আবরার হত্যায় অংশ নেয়

পিবিএ,ঢাকা: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে নির্মম নির্যাতনে (বুয়েট)শিক্ষার্থী আবরার হত্যায় ২৫ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল হয়েছে আদালতে। ২৫ জনের মধ্যে সেই রাতে ১১ জন সরাসরি হত্যায় অংশ নেয়। বুধবার দুপুরে মহানগর হাকিম আদালতে চার্জশিট পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

সরাসরি আবরার হত্যায় অংশ নেয় তারা। ছবি: ফাইল ফটো

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘চার্জশিট আদালতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি, আবরার হত্যা সরাসরি অংশে নেয় ১১ জন। বাকি ১৪ জন হত্যাকাণ্ডে বিভিন্ন পর্যায়ে জড়িত ছিল।

তিনি বলেন, এজাহারভুক্ত ১৯ জন এবং এর বাইরে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আরও ৬ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জন এবং এজাহার বহির্ভূত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া পলাতক রয়েছে চার জন। এর মধ্যে তিন জন এজাহারভুক্ত ও একজন এজাহার বহির্ভূত।’

আবরার হত্যাকাণ্ডে ১১ জনের সরাসরি অংশগ্রহণ, আরও ১৪ জনের সম্পকৃক্ত দেখানো হয়েছে চার্জশিটে।

চার্জশীটে যাদের নাম- মেহেদী হাসান রাসেল, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুল ইসলাম, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা ও এএসএম নাজমুস সাদাত, ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, এসএম মাহমুদ সেতু ও রাফি।

এদের মধ্যে প্রথম ১৬ জনের নাম হত্যা মামলার এজাহারে উল্লেখ ছিল। বাকিদের নাম তদন্তে উঠে এসেছে।

বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজমের প্রধান মনিরুল ইসলাম তিনি জানান, এই হত্যায় হল প্রশাসনের ব্যর্থতাও উঠে এসেছে তদন্তে। তিনি বলেন, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা দীর্ঘদিন ধরে ছোটখাট বিষয়ে নতুন শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করতো। সামান্য দ্বিমত, সালাম না দেয়ার মতো ঘটনায় মারধরের ঘটনা উঠে এসেছে তদন্তে।

চাক্ষুস সাক্ষীর চেয়ে বস্তুগত সাক্ষ্য পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে চার্জশিট তৈরি করা হয়েছে বলেও জানার মনিরুল ইসলাম। তিনি আশা করেন জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে (২১) গত ৬ অক্টোবর রাতে তার কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। তারা ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে গিয়ে আবরারকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে রাত তিনটার দিকে শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় গত ৭ অক্টোবর রাজধানীর চকবাজার থানায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এ মামলার সব আসামি বর্তমানে কারাগারে আছে। তদন্তে নেমে পুলিশ এজাহারের ১৬ জনসহ মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে আট জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। যাদের সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

পিবিএ/জেডআই

আরও পড়ুন...