পিবিএ,হাটহাজারী : ইসলাম ও দেশকে বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া সময়ের অপরিহার্য দাবী করে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও হাটহাজারী মাদরাসার সহযোগী পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
২৮ নভেম্বর(বৃহস্পতিবার) রাতে উত্তর চট্টলার ঐতিহ্যবাহী দীনি ও সেবামূলক সংগঠন আল আমিন সংস্থার ৩দিনব্যাপি তাফসীরুল কুরআন মাহফিলের ২য় দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হেফাজতের ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব, হাটহাজারী মাদরাসার সহযোগি মহাপরিচালক, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, নরওয়েতে কুরআন অবমাননা করে বিশ্বমুসলিমের কলিজায় আঘাত করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনের অবমাননা অগ্রহণযোগ্য, কিছুতেই এই সীমালঙ্ঘন মেনে নেয়া যায় না। এর কারণে মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে।
বিশ্বের কোথাও ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো ধরণের উস্কানি ও ষড়যন্ত্র মেনে নেয়া হবে না। দেশের সংবিধানে মানুষের মর্যাদার কথা বলা হয়েছে। মানুষের ধর্ম বিশ্বাস ও মূল্যবোধ তার মর্যাদার নানা দিকের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। তাই পবিত্র কোরআন অবমাননা মানবাধিকার লংঘন এবং বিশ্ব মানবাধিকার ঘোষণার লংঘনের শামিল।
মাওলানা আনাস মাদানী ও মুহাম্মদ আহসান উল্লাহর যৌথ সঞ্চালনায় হাফেজ তাজুল ইসলাম, মুফতী জসীমুদ্দীন, মাওলানা নোমান ফয়জী ও মাওলানা সোলাইমানের ধারাবাহিক সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত তাফসীর মাহফিলের প্রথম দিবসের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন মাওলানা আহমদ দীদার কাসেমী।
বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণের রায় ইস্যুতে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, কট্টর হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার গায়ের জোরে ভারতীয় হিন্দুদের পক্ষে এই রায় ঘোষণা করে বিশ্ব মুসলিমের কলিজায় আঘাত করেছে। এ রায় বিশ্বমুসলিম কখনো মেনে নেবে না।বিশ্ব মুসলিম এ রায় প্রত্যাখান করছি।
যেকোন প্রান্তে মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হোক না কেন তা বিশ্বের সকল মুসলমানদের।বাবরি মসজিদ ইস্যু ভারতের বিষয় নয়, বরং এর সাথে বিশ্ব মুসলিমের ধর্মীয় অনুভূতির সম্পৃক্ততা বিদ্যমান। তাই ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ রক্ষায় ওআইসি,আরবলীগ সহ বিশ্ব মুসলিম নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হওয়া সময়য়ের অপরিহার্য দাবী।
চলমান গুম ও আটক ইস্যুতে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি, দেশের মেধাবী আলেমদের গুম করা হচ্ছে। আটক করা হচ্ছে। বিভিন্ন ভুল ও ঠুনকো অভিযোগে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে রাতের আঁধারে তাদের তুলে নেয়া হচ্ছে। সপ্তাহ মাস বছর পার হলেও তাদের হদীস মিলছে না। আমরা এসব কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আজকের মাহফিল থেকে গুম ও আটককৃত সকল আলেমদের মুক্তি দেয়ার দাবী জানাচ্ছি।
কাদিয়ানী ইস্যুতে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ৯০% মুসলিম অধ্যুষিত দেশ। আকিদায়ে খতমে নবুওয়াত অস্বীকারকারী কাদিয়ানীরা মুসলিম পরিচয়ে বাংলাদেশে থাকতে পারবে না। আমাদের কথা স্পষ্ট, নাগরিক অধিকারে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান এ দেশে বসবাস করছে। কাদিয়ানীরাও এ দেশের নাগরিক হিসেবে বসবাস করতে পারে এতে আমাদের কোন আপত্তি নেই। তবে মুসলমান হিসেবে কাদিয়ানিরা এদেশে থাকতে পারবে না। কাফের হিসেবে থাকতে হবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে নয় সংখ্যালঘু হিসেবে কাদিয়ানীরা এদেশে বসবাস করতে পারে।
মাহফিলে আরো আলোচনা করেন, মাওলানা আব্দুল বাসেত খান সিরাজী, মাওলানা হাসান জামিল, মাওলানা নজরুল ইসলাম কাসেমী, ড. মাওলানা নুরুল আবছার আযহারী,মাওলানা হামেদ জাহেরী, মাওলানা মুফতি সিরাজুল্লাহ, মুফতি রাফি বিন মুনীর, মাওলানা আবু সাঈদ প্রমুখ ওলামায়ে কেরাম।
পিবিএ/জেডআই