পিবিএ, ঢাকা : প্রতিবন্ধিতা কোনো রোগ নয়। জন্মগতভাবে দুর্ঘটনাসহ নানা কারণে প্রতিবন্ধী হয় মানুষ। তাই বৈষম্যহীন সমাজে প্রতিবন্ধী ও সুস্থ মানুষের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকে না। আর বঙ্গবন্ধুর দিকনিদের্শনা অনুসরণ করে সে সমাজ গড়তে কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন করে আমাদের একটি সংবিধান দিয়েছেন। সেই সংবিধানে তিনি প্রতিবন্ধীদের অধিকারের কথা উল্লেখ করেছেন। সংবিধানে প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকারের কথা স্পষ্ট লেখা আছে। বঙ্গবন্ধু প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিশ্চিত করার নানা পদক্ষেপ নিয়ে গেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে ৮তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২১তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগদান করেন প্রধানমন্ত্রী।
সেখানে প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্স ‘সুবর্ণ ভবন’ উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন দেশে সব মানুষ সমান অধিকার নিয়ে বসবাস করবে। দেশের প্রতিটি উপজেলায় সেবা সাহায্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত উন্নয়নের মূলনীতি অনুযায়ী সবাই সমানতালে এগিয়ে যাবে। সব প্রতিবন্ধীকে সুরক্ষা এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী নিয়ে আমাদের দেশে কোনো সচেতনতা এর আগে ছিল না। সায়মা ওয়াজেদ হোসেন অত্যন্ত পরিশ্রম করে দেশ-বিদেশে অটিজম নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। সারা পৃথিবীতে তিনি অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন। এখন অটিজম ও প্রতিবন্ধী সম্পর্কে মানুষ যথেষ্ট সচেতন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে পোলিও হলে অনেকেই প্রতিবন্ধী হতো। বাংলাদেশ পোলিওমুক্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা পোলিও ভ্যাকসিন দিয়ে পোলিওমুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, অটিজমে ভোগাদের যত্ন নিয়ে ভালোভাবে লেখাপড়া করিয়ে ট্রেনিং দিয়ে স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠা করা যায়। তারা যেন মূলস্রোতের সঙ্গে মূল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে থাকতে পারে। সন্তানের প্রতিবন্ধিতা দূর করতে বাবা-মাকেও কষ্ট স্বীকার করতে হবে।
তিনি বলেন, কানাকে কানা বলিও না, খোঁড়াকে খোঁড়া বলিও না। ছোটবেলায় পাওয়া এই শিক্ষা অন্যান্য শিশুকে দিতে হবে। এভাবেই প্রতিবন্ধীদের বিষয়ে মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। আমরা দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদেরও গুরুত্ব দিতে চাই।
প্রতিবন্ধীরা যেন পিছিয়ে না পড়ে যায়, তাই বর্তমান সরকার তিনটি আইন প্রণয়নসহ তা বাস্তবায়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি ফাউন্ডেশন গঠন করেছি। যে ফাউন্ডেশনে বিভিন্ন দাতা সংস্থা বা সম্পদশালীরা সহযোগিতা করবেন। আন্তর্জাতিকভাবেও অনেক প্রতিষ্ঠান ফাউন্ডেশনকে সহযোগিতা করবে। শুধু আর্থিক সহযোগিতাই নয়, ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সারাবিশ্বে প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা, ট্রেনিং, স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে। উপযুক্ত ট্রেনিং প্রতিবন্ধীরা আর পরনির্ভরশীল হয়ে থাকবে না।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জুয়েনা আজিজ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রতিবন্ধীদের পক্ষে ফেরদৌসী আক্তার, জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের প্রেসিডেন্ট সাইদুল হক।
অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধিতা থেকে উত্তরণের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল এবং অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি, সংগঠন-সংস্থা ও পিতামাতাকে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
পিবিএ/জেডআই