এবার পর্যটক শূন্য সৌন্দর্যের শহর কেপটাউন

পিবিএ,দক্ষিণ আফ্রিকা: বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরতম শহরের তালিকায় প্রথম স্থানে সুন্দরতম শহর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল সৌন্দর্যের রানী নামে খ্যাত শহর দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন । লন্ডন ভিওিক আর্ন্তজাতিক ট্রাভেল সংস্থা দ্যা টেলিগ্রাফ রির্ডাসের জরিপে কেপটাউন ষষ্ঠ বারের ন্যায় পৃথিবীর অন্যতম সৌন্দর্যের শহর হিসেবে তার অবস্থান ধরে রেখেছে। কিন্তু সারা বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের ভ্রমণের অন্যতম কেন্দ্রে থাকা জায়গাগুলোর মধ্যে কেপটাউন দক্ষিণ আফ্রিকা পর্যটন কর্পোরেশনের হিসাব অনুযায়ী প্রতিবছর প্রায় ৩ মিলিয়ন পর্যটক সফর করে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে।

দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তর মহান আল্লাহর সৃষ্টি এ মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে সাজানো অপরুপ সুন্দর এই শহরটিতে প্রতি বছর সারাবিশ্ব থেকে আসা পর্যটকে পরিপূর্ণ থাকলেও এ বছর তুলনামূলকভাবে বিদেশি পর্যটকের আনাগোনা নেই বললেও চলে । প্রতি বছর ডিসেম্বরে খ্রিস্টানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ক্রিসমাসের ছুটি কাটাতে সারাবিশ্ব থেকে ছুটে আসে মিলিয়ন পর্যটক।

এ বছরে শেষ হতে আর মাত্র ৯ দিন বাকি থাকলেও পর্যটকদের ভিড় বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর তালিকায় প্রথম স্থান অধিকারী দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তর কেপটাউন শহরের চলতি বছরের চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত।
এই দিকে কেপটাউন হোটেল মালিক সমিতির এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে, প্রতিবছর জুন ও জুলাই মাসের পর থেকে ডিসেম্বর মাসের জন্য কেপটাউনের ছোট বড় সহ সবধরণের ৩ তারকা থেকে ৫ তারকা হোটেল সম্পূর্ণ বুকিং থাকে, কিন্তু চলতি বছরের ডিসেম্বর শেষ হওয়ার সপ্তাহ খানেক বাকি থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০% আবাসিক হোটেলের কোনও বুকিং হয়নি। এমন কি অনেক হোটেল সম্পুর্ন ভাবে খালি পড়ে আছে। পরিবহন মালিকরা ও বলেছেন তারা এইবার আশানুরূপ পযর্টক পাননি।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতে , এই বার বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা ছাড়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন সহ সকল পর্যটক এরিয়ায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা লুটপাট অগ্নিসংযোগ সহ নানান অপরাধ প্রবণতাকে দায়ী করে তারা বলেছেন, বিদেশীদের জন্য কেপটাউন সহ অনেক এলাকায় এখন মোটেও নিরাপদ নয়, কেপটাউনে বর্তমানে অভ্যন্তরীণ অপরাধ প্রবণতা মারাত্মকভাবে বেড়ে চলছে, যার কারণে বিদেশি পর্যটকেরা কেপটাউন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।এ ভাবে চলতে থাকলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা। এ দিকে,দক্ষিণ আফ্রিকায় ডিসেম্বর মাসে যেমনটি উৎসবমুখর তেমনি ব্যাবসায়ী দের জন্য ভয়ঙ্কর এবং আতংক। সেই সাথে সকল ব্যবসায়ীগন অনেক আশা করেন কম বেশী ব্যবসা বানিজ্য ও হবে ডিসেম্বর মাসে।

খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী এই দেশটিতে যিশু খ্রিষ্টের জন্মদিনের মধ্য দিয়ে শুরু করে ক্রিসমাস পালন এই উপলক্ষে সাজ সাজ রব পড়ে যায় এই ডিসেম্বর মাসটিতে। সে সাথে অপরাধ ও আশংকাজনক হারে বেড়ে যায় চুরি ডাকাতি ও ছিনতাই সহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড।

সারা বছরের অন্যআন্য মাসের তুলনায় ডিসেম্বর মাস আসলেই অপরাধ বেড়ে যায় দ্বিগুণেরও বেশি।ক্রিসমাস কে সামনে রেখে খরছ যোগান দিতে কৃষাঙ্গরা অনেকটা পাগল হয়ে যায় দেশী-বিদেশী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে । চুরি,ডাকাতি এমন কি সংঘটিত হয় খুনের মতো জঘন্যতম নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনা। কৃষাঙ্গদের এই টার্গেটে সবসময়ই শিকার হয় প্রবাসী ভিনদেশী ব্যবসায়ীরা। শহর থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি লোকেশনে এলাকায় চুরি ডাকাতি ও খুনের শিকার হয় বেশিরভাগ বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা।

চলতি ডিসেম্বরের গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি পাত ও দীর্ঘ লোডশেডিংয়ের কারণে অচল হয়ে পড়েছে ব্যবসা বানিজ্য সহ নাগরিক জীবন। যার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক প্রবাসী ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য গুটিয়ে অন্যত্রে চলে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন।

পিবিএ/আরিফুর রহমান দিলু/বিএইচ

আরও পড়ুন...