পিবিএ ডেস্ক : তার প্রথম পরিচিতি তিনি র্যাম্প মডেল। বলিউডে সিঙ্গল মাদারের তালিকায় তার নাম প্রথম দিকে। নিজের ইচ্ছে মতো জীবনযাপনের আর এক নাম সুস্মিতা সেন। একটি ফ্যাশন শোয়ের এক ফাঁকে সাক্ষাৎকারের শুরুতেই তিনি শর্ত জুড়ে দেন যে তার বিয়ে, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তাকে কোনও প্রশ্ন করা যাবে না। অথচ ইনস্টাগ্রাম খুললেই প্রেমিক রহমান শলের সঙ্গে তার ওয়র্কআউটের ভিডিও চোখে পড়ে না। এমনকি, সম্প্রতি মেদঝরানো, ছিপছিপে চেহারার সুস্মিতা যে টেবিলে বসে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন, তার অদূরেই সোফায় বসেছিলেন স্বয়ং রহমান। শো’তে দর্শকাসনে, বাইট দেওয়ার সময়ে সুস্মিতার থেকে একটু দূরে সর্বত্রই দেখা গেল প্রেমিকপ্রবরকে। অগত্যা প্রশ্ন করতেই হল! বিয়ে করেননি…কথাটা শেষ করতে না দিয়ে সুস্মিতা শুধরে দিলেন ‘এখনও পর্যন্ত বিয়ে করিনি।’ বলিউডে কান পাতলে তেমন গুঞ্জন অবশ্য শোনাই যাচ্ছে। তবে এতদিন বিয়ে করেননি কেন? সংসারী হতে ভয় পান? সাংবাদিকের চোখে চোখ রেখে এক গাল হেসে বললেন, ‘এখনও অবধি নিজের গর্ভে সন্তান ধারণ করিনি। তা বলে বাচ্চা তো ভয় পাই না।’
গত বছর সুস্মিতার আইকনিক গান ‘দিলবার দিলবার’- এর নতুন ভার্সনে নেচে ঝড় তুলেছিলেন নোরা ফতেহি। কিন্তু নোরা কি তার উচ্চতা ছুঁতে পেরেছেন? বললেন, ‘এটাই আমরা ভুল করি। সব কিছুর তুলনায় চলে যাই। দু’টো গানের পরিবেশন সম্পূর্ণ আলাদা। আমার গানে বেলি ডান্স ছিল না। নতুন ভার্সনে নোরা খুব ভাল বেলি ডান্স করেছে। তবে আমার মতে, যেকোনও ক্রিয়েটিভ এক্সপ্রেশন স্বতন্ত্র। অতীত বা ভবিষ্যতের কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। আমি খুব খুশি, নতুন প্রজন্মের কাছে এই গানকে নতুনভাবে তুলে ধরার জন্য।’
মডেল, সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার মেন্টর হিসেবে সুস্মিতার যে নামডাক, অভিনয়ের ক্যারিয়ারে সেই সাফল্য পাননি তিনি। ছবির ক্ষেত্রে যা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে কি আপনি খুশি? জোর গলায় বললেন, ‘যা করেছি, তার এতটুকুও বদলাতে চাই না। আসলে আমাদের জীবন অনেক কিছুর সমষ্টি। তার মধ্যে রয়েছে সম্পর্ক, ক্যারিয়ার, সামাজিক কর্তব্য আবার নিজের প্রতি দায়িত্বও। অনেকেই একমুখী জীবনে বাঁচেন, সেটা তাদের পছন্দ। কিন্তু প্রথম থেকেই আমি ঠিক করে নিয়েছিলাম, আমি বহুমুখী হয়ে বাঁচব। অনেক কিছু করতে গিয়ে কোনওটা ক্লিক করে, কোনওটা নয়। কিন্তু আমি আমার সাফল্য বা ব্যর্থতা তা দিয়ে মাপি না। আমার ছবি হয়তো চলেনি কিন্তু, তাই বলে আমি ব্যর্থ নই।’
যে র্যাম্প তার পরিচিতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, সেখানেই ফিরে ফিরে পাওয়া যায় তাকে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ষোলো বছর বয়সে প্রথম র্যাম্পে হেঁটেছিলাম। সেটাই ছিল লাইভ দর্শকের সঙ্গে আমার প্রথম যোগসূত্র স্থাপন। আমি এখন ৪৩। যত বার র্যাম্পে ফিরি, সেই ষোড়শীর এনার্জি অনুভব করি। আর এটায় কিন্তু কোনও এডিটিং বা কারেকশন নেই। নিজের পরিচিতির গর্ব নিয়ে যখন কেউ র্যাম্পে হাঁটেন, তার মুখে-চোখে আলাদা ঔজ্জ্বল্য ধরা পড়ে।’
সুস্মিতা বরাবরই চেনা ছকের বাইরে। দুই মেয়ে রেনে আর আলিশা তার সর্বক্ষণের সঙ্গী। কথায় কথায় জানালেন, বড় মেয়ে রেনেও গ্ল্যামার ইন্ডাস্ট্রিতে আসতে চান। সে ক্ষেত্রে তার সুপার মমের চেয়ে ভাল মেন্টর যে আর কেউ হবেন না, তা নিঃসন্দেহে বলাই যায়।
পিবিএ/জিজি