বাংলাদেশকে টার্গেট করেই ভারতের এনআরসি আইন : মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ফটো

পিবিএ, ঢাকা : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সরকার যে সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় বিভাজনের কার্যক্রম শুরু করছে, তারই উচ্চতর বা দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে এই নাগরকিত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)। এই আইনের প্রধান লক্ষ্য বিশেষেভাবে মুসলমান অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ। বিশেষ করে, বাংলাদশেকে টার্গেট করেই এই আইন করা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন ।

আজ বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ইতোমধ্যইে বাংলাদেশে সন্নিহিত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের ১৯ লাখ নাগরিককে এনআরসির মাধ্যমে নাগরিকহীন ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসির মাধ্যমে নাগরিকহীন ঘোষণা করা ভারত সরকারের পরবর্তী টার্গেট বাংলাদেশের বৃহত্তম সীমান্তর্বতী (২,২৬২ কিলোমিটার) রাজ্য পশ্চিমবাংলা।

তাই একথা অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে বলা যায়, ভারতের নাগরিক সংশোধনী আইন (সিএএ) ও এনআরসির মাধ্যমে অবধারিত ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হচ্ছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। কারণ, ভারতের বৃহত্তম সীমান্ত সন্নিহিত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান সবদিক দিয়ে। যেকোন বিচারেই ভারতের প্রথমআইনের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশের মানুষের নাগরিকবৃন্দ।

তিনি বলেন, কিন্তু আমরা অত্যন্ত দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে লক্ষ্য করলাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অত্যন্ত নির্লজ্জের মত বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থ সম্পূর্ণরূপে বিস্তৃত হয়ে কার্যত ভারতসহ বিশ্বের কাছে সমালোচিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন প্রণয়নের জন্য অমিত শাহ’র পার্লামেন্টে বর্ণিত মিথ্যা, ভিত্তিহীন, ধর্মীয় বিভক্তি সৃষ্টিকারী বাংলাদেশ ও বিএনপি বিরোধী বক্তব্য স্বীকৃতি প্রদান করেছেন।

অমিত শাহ’র বক্তব্যের প্রতিবাদে অবস্থান সমগ্র জাতিকে বিস্মিত ও বিক্ষুব্ধ করেছে।
বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, বিএনপি এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সরকার সম্পর্কে যে বক্তব্য অমিত শাহ দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন, বৈষম্যমূলক, ধর্মীয় বিভক্তি সৃষ্টিকারী এবং আওয়ামী লীগ ও বিজেপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সুবিধা লাভের ভিন্ন কৌশল মাত্র।

আমরা বলতে চাই, ওবায়দুল কাদের এবং তার অবৈধ সরকার অমিত শাহ’র বক্তব্যের সাফাই গাইতে গিয়ে শুধুমাত্র এদেশের মানুষের স্বার্থ বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেননি একসাথে বিতর্কিত এই আইনের সমর্থন করে সকল নিরীহ সাধারণ ভারতীয় মানুষের ঘৃণ্য সহযোগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, একটা ভোটারবিহীন অবৈধ সরকার অমিত শাহ’র বক্তব্যকে সমর্থন করতে গিয়ে নিজেদের আদর্শিক পিতা মুজিব সরকারের সময়কালকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ও যে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেন না, ওবায়দুল কাদের অবস্থান সেটাই প্রমাণ করে। কারণ ভারতের পার্লামেন্টে অমিত শাহ যে বক্তব্য দিয়েছেন সেখানে শুধুমাত্র বিএনপি’র সময়কালকেই নয় শেখ মুজিবের ৭১ পরবর্তী সরকার এবং বর্তমান অবৈধ সরকার কেও সরাসরি অভিযোগ করেছেন। অমিত শাহের বক্তব্য সেটাই সুস্পষ্ট প্রমাণ। অমিত শাহর বক্তব্য কে সত্য বলে ধরে নিয়ে ওবায়দুল কাদের স্বীকার করেছেন যে ১৯৭১ সালের পরে শেখ মুজিব সরকার এবং বর্তমান অবৈধ সরকারের আমলেও যে সংখ্যালঘু নির্যাতন থামেনি সেটা তিনি এবং তার শেখ হাসিনা সরকার মেনে নিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ন মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ।

পিবিএ/জেডআই

আরও পড়ুন...