পিবিএ, কুড়িগ্রাম: বাংলাদেশ স্বাধীন হবার ৪৮ বছর পর কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে একটি শত বছরের কুয়ার গাঁয়ে পাকিস্তান জিন্দাবাদ লেখাটি মুছে ফেলে জয় বাংলা স্থাপন করা হল। বিষয়টি বিভিন্ন গণমাাধ্যমে প্রকাশিত হবার পর প্রশাসনের নজরে আসলে সংস্কারের কার্যক্রম শুরু করে উপজেলা প্রশাসন। এত করে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনসহ সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি বিরাজ করছে।
কুয়াটিতে পাকিস্থানের জাতীয় পতাকার প্রতীক চাঁদতারা অঙ্কিত ফলকে পাকিস্থান জিন্দাবাদ-মালিক ভোলা মামুদ। ১৩১৩ চৈত্র মাস। মেরামত ১৩৫৭। গ্রামবাসী ও ইউনিয়ন বোর্ড। সৈয়দ উদ্দিন সরকার, পিইউবি লেখা। এই কুয়াকে ঘিরে ইন্দ্রার পাড় নামে পরিচিত কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের আজোয়াটারি গ্রাম।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, এই এলাকায় বৃটিশ আমলে পানির সংকট ছিল। আর সেই সংকট দূর করার জন্য মৃত ভোলা মামুদ নিজ উদ্যোগে আধাশতক জায়গায় একটি কুয়া তৈরি করেন। সেই থেকে আজ অবধি এই কুয়ার পানি শুকায়নি। এই কুয়ার পানি দিয়ে এখানকার মানুষ খাবার, গোসলসহ সাংসারিক কাজে এখনও ব্যবহার করে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন জানান, প্রাচীনতম কুয়াটি মেরামতের জন্য গত ২০১৭/১৮ অর্থ বছরে বরাদ্দ আসে। ইউনিয়ন পরিষদের এল,জি,এস,পি প্রকল্প-৩ থেকে এ বরাদ্দ। এটি ২০১৯ সালের জানুয়ারী মাসে দেড় লাখ টাকা ব্যয়ে এটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। গত ১৫ দিন ধরে কুয়াটি সংস্কারের কাজ চলছে। এরই মধ্যেই পাকিস্তান জিন্দাবাদ শব্দটি মুছে ফেলা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই সংস্কারের কাজ শেষ করে জয় বাংলা শ্লোগান নাম করণ করা হবে ।
এ বিষয়ে উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মজিবর রহমান জানান, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে জীবন বাজি রেখে এদেশ স্বাধীন করেছি। সেই দেশের মাটিতেই যদি পাকিস্থান জিন্দাবাদ শব্দটি থাকে এটা খুবেই দুঃখজনক। তার পরেও স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর কুয়ার গায়ে থেকে পাকিস্থান জিন্দাবাদ শব্দটি মুছে ফেলায় উপজেলার সকল মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। এত বছর পর পাকিস্থান জিন্দাবাদটি মুছে ফেলে জয় বাংলা নাম করন করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদসহ উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ ।
এ প্রসঙ্গে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাছুমা আরেফিন জানান, কুয়ার সংস্কারের কাজ চলছে। এদেশে পাকিস্থান জিন্দাবাদ লেখাটি থাকবে না। কুয়ার গায়ে পাকিস্থান জিন্দাবাদ লেখাটি মুছে ফেলা হয়েছে। সংস্কারের কাজ শেষ হলে জয় বাংলা নাম করণ করা হবে।
পিবিএ/এমআইবি/এফএস
