পিবিএ ডেস্ক : স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে অঝোরে কাঁদছিল আট বছরের শিশুটি। জামায় রক্তের দাগ। চোখে-মুখে আতঙ্ক। যন্ত্রণায় কুঁকড়ে রয়েছে সে। কী হয়েছে জানতে চাওয়ায় মায়ের কাছে সব কথা খুলে বলে শিশুটি। ঘটনার কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে যান তার মা।
ভারতের কলকাতার জিডি বিড়লা স্কুলকাণ্ডের ছায়া দেখা দিল অন্ধ্রপ্রদেশের এক সরকারি স্কুলে। স্কুল চত্বরেই আট বছরের ওই নাবালিকাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছেন ওই স্কুলেরই প্রধান শিক্ষক। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করছে পুলিশ।
ঘটনা ঘটেছে হায়দ্রাবাদের অদূরে কৃষ্ণ জেলার এক স্কুলে। পুলিশের কাছে ওই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার তাদের মেয়েকে ধর্ষণ করেছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। স্কুলের ভিতরেই তাকে যৌন নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। ওই দিন স্কুলের একটি ফাঁকা ঘরে শিশুটিকে নিয়ে যায় প্রধান শিক্ষক। এর পর সেখানেই তাকে ধর্ষণ করে। এর পর বাড়ি ফিরে কাঁদতে থাকে ওই শিশুটি। তার জামায় রক্তের দাগ লেগে থাকতে দেখেন তার মা। যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যেতে থাকে সে। গোটা ঘটনাটাই জানার পর সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় হাসপাতালে মেয়েকে নিয়ে যান ওই মহিলা। সেখানে পরীক্ষানিরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা জানান, শিশুটির উপর যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রক্তপাত বন্ধ করতে ওই শিশুটির যৌনাঙ্গে চারটি সেলাই করতে হয়েছে।
ঘটনায় অভিযোগের তীর স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দিকে। তবে প্রাথমিকভাবে এ নিয়ে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি শিশুটির পরিবার। দিন দু’য়েক পরে স্থানীয় সমাজকর্মীদের তৎপরটায় খানিকটা সাহস পান তারা। এরপর পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নির্যাতিতার পরিবার। গতকাল বৃহস্পতিবার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তারা।
ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার। রাজ্যের মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী জি শ্রীনিবাস এ নিয়ে ওই স্কুল কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ঘটনার তদন্ত করে ওই অভিযুক্তকে বরখাস্ত করার পরামর্শ দেন তিনি। জেলার শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক এম ভি রাজ্যলক্ষ্ণী বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া, এ বিষয়ে একটি বিভাগীয় তদন্তও করা হবে।’