‘পিকেটিং’বিহীন হরতালে নয়া পল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ

 

পিবিএ ঢাকা: ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলে বিএনপির ডাকা ‘পিকেটিং’বিহীন হরতালে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ফুটপাতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন নেতা-কর্মীরা।

রাজধানীর নয়া পল্টনের সামনে বেলা ১২টা পর্যন্ত চলা এ অবস্থানে যোগ দিয়েছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির পরাজিত মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন।

নির্বাচন ছাড়া প্রকাশ্য কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে এটাই ইশরাকের প্রথম অংশগ্রহণ। সদ্যপ্রয়াত বিএনপি নেতা মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে সকাল ১১টায় এসেই বিক্ষোভরত নেতা-কর্মীদের মধ্যে বসে যান।

অনেকে তাকে পেছনে নেতাদের সঙ্গে চেয়ারে বসতে বললেও তিনি বসেননি। কর্মীদের পাশে বসে নিজেই শ্লোগানের নেতৃত্ব দেন ইশরাক। তার সঙ্গে শতাধিক নেতা-কর্মী ফুটপাতে বসে বিক্ষোভ করছে।

তারা ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’, ‘আজকের হরতাল, চলছে, চলবে’, দাবি আদায়ের হরতাল চলছে চলবে’. ভোট চোর ভোট চোর, শেখ হাসিনার ভোট চোর’ ‘সংগ্রাম, সংগ্রাম, রাজপথে সংগ্রাম চলছে, চলবে’, ‘প্রহসনের নির্বাচন মানি না, মানবো না’ ইত্যাদি শ্লোগান দেয়।

১২টার কিছু আগে মতিঝিলের সহকারি পুলিশ কমিশনার জাহিদুর রহমান সোহাগ এসে তাদের ফুটপাত থেকে তুলে দেন।

তিনি বিএনপি নেতাদের বলেন, “আপনারা ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি করতে পারবেন। আপনাদের কর্মসূচিতে সৃষ্টি হচ্ছে।”

এর আগে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে ২০/৩০ জন নেতা-কর্মী সকাল ৬টা থেকে কার্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নেয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।

নেতাদের মধ্যে খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা আবেদ রাজা, শফিউল বারী বাবু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সুলতানা আহমেদ ও নিপুণ রায় চৌধুরী এসময় রিজভীর সঙ্গে ছিলেন।

রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, “সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে যে ভোট জালিয়াতি হয়ে গেল তার প্রতিবাদ জানাতেই আমাদের এ কর্মসূচি। আমাদের নেত্রী এদেশের ১৬ কোটি মানুষের জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সরকার আটক করে রেখেছে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি এই অন্যায়ের দুই বছর পূর্ণ হবে। আমরা এরও প্রতিবাদ করছি।
“আমাদের এই শান্তিপূর্ণ অবস্থান, আমরা সরকারের অন্যায়-অবিচারগুলো তুলে ধরতে এই অবস্থান নিয়েছি। ঢাকা মহানগীর বিভিন্ন জায়গায় আমাদের নেতা-কর্মীরা এরকম শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালন করছে।”

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সকালে সাড়ে ৯টায় উত্তরার বাসা থেকে মটরবাইকে চড়ে নয়া পল্টনে আসেন। তার সঙ্গে কার্যালয়ের ভেতরে ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, তাইফুল ইসলাম টিপু ও বেলাল আহমেদসহ অফিস কর্মীরা।

২০১৫ সালের টানা অবরোধের পর বিএনপির প্রথম হরতাল কর্মসূচির সকালে কার্যালয়ের সামনে একটি ‘প্রতীকি ইভিএম মেশিন’ পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানান নেতা-কর্মীরা। তখন কার্যালয় ঘিরে ছিল ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ।

বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে ঢাকা শহরের যানচলাচলে বিঘ্ন না ঘটলেও সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসের মতো যানবাহনের চাপ নেই। রাস্তায় রিকশা চোখে পড়ছে বেশি। ঢাকায় সড়কের কোথাও নেতা-কর্মীদের পিকেটিং করতে দেখা যায়নি।

রামপুরা, মালিবাগ, শান্তিনগর, বিজয় নগর, সচিবালয়, তোপখানা রোড, দৈনিক বাংলা মোড়, মতিঝিল ঘুরে দেখা গেছে সর্বত্র যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বিআরটিসি বাস, বিভিন্ন সিটি সার্ভিসের মিনিবাস ছাড়া রিকশার চলাচল বেশি। তবে প্রাইভেট কারের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। সপ্তাহের প্রথম অফিস দিন হওয়ায় মানুষজনের ব্যাপক উপস্থিতি অফিস পাড়ায় দেখা গেছে।

পিবিএ/এমআর

আরও পড়ুন...