হাবিব সরোয়ার আজাদ : গতদুদিন ধরেই থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সংবাদ মাধ্যমগুলোতে একটি খবর ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে-সেটি হলো পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান একটি অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন, ‘গরু কচুরিপানা খেতে পারলে আমরা কেন পারব না।’
জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ সহ আরো ক’জন এমপি সরব সমালোচনায় ব্যস্ত ছিলেন কচুরিপানা বিতর্ক নিয়ে।
সোমবার দুপুরে এনইসি-২ সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কৃষি গবেষণায় অবদান রাখায় দু’জনের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘কচুরিপানা নিয়ে কিছু করা যায় কিনা। কচুরিপানার পাতা খাওয়া যায় না কোনো মতে? গরু তো খায়। গরু খেতে পারলে আমরা খেতে পারব না কেন?’ তিনি মূলত কচুরিপানা নিয়ে গবেষণার কথা বলেছেন।’
পরিকল্পনামন্ত্রীর এমন মন্তব্যে অনেকেই কটূক্তিও করেন।
কচুরিপানা দিয়ে কাগজের মন্ড তৈরির পাশাপাশি বায়ো ফুয়েল হিসেবে ব্যবহার করে বিশ্বের অনেক দেশ। শুধু তাই নয়, কচুরিপানা আসলেই খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয় কম্বোডিয়ায়। দেশটির মানুষ কচুরিপানা লতি আর ফুল ব্যবহার করে অসাধারণ একটি মাছের স্যুপ তৈরি করে, যা তাদের নিত্যকার খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়।
আপনাদের নজওে আনতেই আজ দেয়া হলো কচুরিপানার মজাদার একটি রেসিপি…
যা যা লাগবে: কচুরিপানার ফুল ও লতি, শাক পাতা, শোল মাছ, রসুন, আদা, লাল মরিচ, বিশুদ্ধ পানি, লবণ।
প্রস্তুত প্রণালী: প্রথমে শোল মাছ কেটে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়ে হবে। এরপর কচুরিপানা থেকে ফুলসহ লতি আলাদা করে নিতে হবে। এরপর শাক পাতা কুচি করে কেটে নিতে হবে। এরপর চুলায় পানি গরম করে তাতে রসুন কোয়া ও আদা ছিলে পিষে দিয়ে দিতে হবে। পরে ধুয়ে পিচ করে রাখা মাছের টুকরা দিয়ে দিতে হবে। মাছ সিদ্ধ হয়ে আসলে এতে একে একে কেটে রাখা শাক পাতা, কচুরিপানার ফুল ও লতি দিয়ে দিতে হবে। এরপর লাল মরিচ ফালি করে কেটে দিয়ে দিতে হবে। সবশেষে লবণ দিয়ে ফুটাতে হবে। ১০ মিনিট বাদে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।
উল্লেখ্য, কচুরিপানার আদি নিবাস দক্ষিণ আমেরিকা। এটি মুক্তভাবে ভাসমান বহুবর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। কচুরিপানা খুবই দ্রত বংশবিস্তার করতে পারে। এটি প্রচুর পরিমাণে বীজ তৈরি করে যা ৩০ বছর পরও অঙ্কুরোদগম ঘটাতে পারে। সবচেয়ে পরিচিত কচুরিপানা ঊরপযযড়ৎহরধ পৎধংংরঢ়বং রাতারাতি বংশবৃদ্ধি করে এবং প্রায় দুই সপ্তাহে দ্বিগুণ হয়ে যায়। এর কান্ড থেকে দীর্ঘ, তন্তুময়, বহুধাবিভক্ত মূল বের হয়, যার রঙ বেগুনি-কালো। একটি পুষ্পবৃন্ত থেকে ৮-১৫টি আকর্ষণীয় ৬ পাঁপড়ি বিশিষ্ট ফুলের থোকা তৈরি হয়।
লেখক: হাবিব সরোয়ার আজাদ, গণমাধ্যম কর্মী-১৯.০২.২০