পিবিএ, ডেস্ক : দিল্লির হিন্দুত্ববাদী তাণ্ডবের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার দল বিজেপিকে দায়ী করেছেন প্রখ্যাত ভারতীয় লেখক ও অ্যাকটিভিস্ট অরুন্ধতী রায়। বুকারজয়ী এই লেখক সেখানকার ঘটনাকে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা হিসেবে দেখতে নারাজ। সহিংসতার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত এক কর্মসূচিতে দেওয়া ভাষণে রবিবার (১ মার্চ ২০২০) অরুন্ধতী বলেন, নির্লজ্জ ফ্যাসিস্ট মোদি সরকার দিল্লিতে ফ্যাসিবাদবিরোধী মুসলিম জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।
২৩ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর শুরু হওয়া হিন্দুত্ববাদী তাণ্ডবে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬ জনে। এই তাণ্ডবের শুরু হয় বিজেপি নেতাদের উসকানিতে। এ ব্যাপারে সরকার ও পুলিশকেও নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। দিল্লির এই ঘটনাকে ভারতের করোনা ভাইরাস আখ্যা দিয়েছেন অরুন্ধতী।
সহিংসতার প্রতিবাদে দিল্লির যন্তর মন্তরের সামনে জড়ো হওয়া মানুষদের উদ্দেশ্যে অরুন্ধতী রায় একটি ভাষণ দেন। সে দেশের সংবাদমাধ্যম স্ক্রল.ইনে ভাষণটি প্রবন্ধ আকারে ছাপা হয়। সেখানে অরুন্ধতী বলেন, “আজকের এই বেআব্রু ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রযন্ত্রের মদতপুষ্ট লুম্পেন জনতা ‘জয় শ্রী রাম’ শ্লোগান দিয়ে আক্রমণটা শুরু করেছিল। এইসব শ্লোগান সত্ত্বেও, লোকে যাকে হিন্দু মুসলিম ‘দাঙ্গা’ হিসেবে দেখে থাকে, এই ঘটনা তেমন কিছু ছিল না। এটি ছিলো ফ্যাসিস্ট আর ফ্যাসিবিরোধীদের মধ্যে চলমান সংগ্রামের একটি বহিঃপ্রকাশ – যেখানে মুসলমানরা ফ্যাসিস্টদের ‘শত্রু’ তালিকার একেবারে শুরুতেই আছে।”
অরুন্ধতী আরও বলে”ন, “আমরা সকলেই সেই ভিডিওগুলো দেখেছি, যেখানে পুলিশ হয় সাক্ষী গোপালের ভূমিকা পালন করেছে, আর না হয় নিজেরাই অংশ নিয়েছে অগ্নিসংযোগে। আমরা তাদেরকে সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙতে দেখেছি, যেমনটি তারা ১৫ ডিসেম্বরে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে ভাঙচুরচালানোর সময়ও (গত বছরের) করেছিল। আমরা তাদেরকে আহত মুসলমান পুরুষদেরকে পেটাতে দেখেছি, যাদের একজনের ওপর আরেকজনকে ফেলে রাখা হয়েছিল, আর বাধ্য করা হচ্ছিল জাতীয় সঙ্গীত গাইতে। আমরা জানি এই তরুণদের একজন মরে গেছে। হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যকার এইসব মৃত, আহত ও বিধ্বস্ত মানুষেরা সেই সরকারের শিকার, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি, আমাদের নির্লজ্জ ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী, যিনি আঠারো বছর আগে একটি রাজ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা এর চেয়ে অনেক বড় আকারের একটি হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হবার সময় সেই রাজ্যের সর্বোচ্চ ক্ষমতার জন্য অপরিচিত কেউ ছিলেন না।”
পিবিএ/জেডআই