পিবিএ,ঢাকা : করোনো আতঙ্কে সোমবারের ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর মঙ্গলবার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা দেখা যাচ্ছে শেয়ারবাজারে। লেনদেন শুরুর পর প্রথম ঘণ্টা শেষে বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪২ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৭৬ শতাংশ দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল। এতে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪১ পয়েন্ট বা ১ শতাংশ বেড়ে ৪০৪৯ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
দেশে তিনজন করোনোভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন-সরকারিভাবে এমন খবর প্রকাশের পরদিন সোমবার শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন হয়েছিল। লেনদেন হওয়া ৯৯ শতাংশেরও বেশি শেয়ার দর হারায়। এতে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৭৯ পয়েন্ট বা ৬ দশমিক ৫২ শতাংশ পতন হয়। সূচকটি নেমেছিল ৪০০৮ পয়েন্টে।
এর ধারাবাহিকতায় আজ যেনো বড় দরপতন না হয়, তা ঠেকাতে সরকারি ব্যাংক ও বিনিয়োগ সংস্থাকে কড়া নির্দেশ ছিল। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় লেনদেনের শুরু থেকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রূপালীসহ অন্য ব্যাংকগুলোও ক্রমাগত শেয়ার দিনে দরপতন পরিস্থিতি মোকাবেলার চেষ্টা করে। তাতে তারা সফলও হয়।
দিনের লেনদেন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, তাদের চেষ্টার কারণে লেনদেন শুরুর মাত্র ১৯ মিনিটের মাথায় লেনদেনে আসা ৮৫ শতাংশেরও বেশি শেয়ারের দর বাড়ে। তাতে ভর করে ডিএসইএক্স সূচকটি গতকালের তুলনায় ১১৬ পয়েন্ট ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে ৪১২৪ পয়েন্ট ছাড়ায়।
যদিও তাদের কেনার চাপ কিছুটা কমলে এরপর অনেক শেয়ার পুনরায় দর হারাতে দেখা যাচ্ছে। লেনদেন শুরুর এক ঘণ্টা পর ডিএসইতে লেনদেনে আসা ৩৪২ শেয়ারের মধ্যে ২৬০টিকে দর বেড়ে, ৪৫টিকে দর হারিয়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে।
দরবৃদ্ধির হার কমায় শুরুর তুলনায় সূচকের বৃদ্ধিও অনেকটা কমে এসেছে। এ সময় ডিএসইএক্স সোমবারের তুলনায় ৪১ পয়েন্ট বেড়ে ৪০৪৯ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা গেছে। তাছাড়া প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে কেনাবেচা হওয়া সব শেয়ার ও ফান্ডের মূল্য ছিল ১০৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
রূপালী ব্যাংকের সিএফও শওকত জাহান খান বলেন, গতকালের বড় দরপতনের পুনরাবৃত্তি যাতে আজ না হয়, তার জন্য লেনদেনের শুরু থেকে সক্রিয় ছিলেন তারা। এ বিষয়ে ওপরের নির্দেশনা আছে বলেও জানান তিনি।
শওকত জাহান জানান, দরপতন ঠেকাতে সোমবার প্রায় ৮ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছিল তার ব্যাংক। আজ ১০ কোটি টাকার শেয়ার কেনার পরিকল্পনা আছে।
এদিকে দরপতন ঠেকাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যাতে সক্রিয় ভূমিকা রাখে, সে আহ্বান রাখতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় তালিকাভুক্ত ৩০ ব্যাংকের এমডিদের একটি বৈঠকে বসার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। ঢাকার নিকুঞ্জে ডিএসইর নতুন কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ডিএসইর এমডি ছানাউল হক জানান, শেয়ারবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর বিকল্প নেই। সরকারের নির্দেশনার পর বাংলাদেশ ব্যাংক আইনি ছাড় দিয়ে ব্যাংকগুলোকে বিশেষ বিনিয়োগ তহবিল গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে। এ সুযোগটি যাতে সব ব্যাংক নেয়, সে বিষয়েই ব্যাংকের এমডিদের অনুরোধ জানানো হবে।
মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সংগঠন বিএমবিএর সভাপতি ছায়েদুর রহমান জানান, বিশেষ তহবিল গঠনের বিষয়ে সার্কুলার জারির পর অনেক ব্যাংকসই এ তহবিল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তহবিলগুলো যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর হয়, সে বিষয়ে কাজ করছি। আশা করছি, আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে ভালো ফল দৃশ্যমান হবে।
পিবিএ/জেডআই