করোনার ঔষধ নিয়ে গুজব, রাতের ঘুম হারাম

পিবিএ,পটুয়াখালী: সারা বাংলাদেশে মোট ১০ জন করোনা রোগী পাওয়া গেছে এমন খবরে দেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন জেলায়-উপজেলায় বিষয়টি চর্চিত হচ্ছে। এদিকে করোনায় বিধ্বস্ত ইতালি, জার্মান, বাহারাইন, সৌদি আরব থেকে দলে দলে প্রবাসীরা আসায় এই আতঙ্কে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।

অন্যদিকে আতঙ্কিত জনতার অনেকেই নানা সময় নানা গুজবে কান দিচ্ছেন। করোনা থেকে মুক্তি মিলবে এমন তথ্য পেলেই তা যাচাই-বাছাই না করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। সেটা কোনোরকম যাচাই বাছাই না করেই।

এমনই এক গুজবে রাতের ঘুম হারাম হয়েছে পটুয়াখালীর জেলার বাসিন্দাদের। একজন প্রসিদ্ধ পীর সাহেব নাকি স্বপ্ন দেখেছেন এমন গুজবের ওপর ভিত্তি করে তথ্য রটে, থানকুনি পাতা খেলে করোনাভাইরাস আর সংক্রমিত হবে না। মিলবে করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি।

সেই গুজবে সাড়া দিয়ে পটুয়াখালী জেলার সদর উপজেলা, দুমকি, বাউফল, দশমিনা, মির্জাগঞ্জ, রাঙ্গাবালী, গলাচিপা ও কলাপাড়া’র অধিবাসীরা রাতের আঁধারে থানকুনি পাতা সংগ্রহে নেমেছেন। অনেকে চিবিয়ে খেয়েছেন সে পাতা। তারা বলছেন, পীরকে স্বপ্নে বলে দেয়া এই থানকুনি পাতাই করোনাভাইরাসের উত্তম প্রতিষেধক।

জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২ টা থেকে শুরু হয়েছে এ গুজব। এ নিয়ে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টও করেছেন। কেউ কেউ থানকুনি পাতা সংগ্রহ করতে পেরেছেন জানিয়ে ছবিও পোস্ট করেছেন। কেউ কেউ স্বজন, বন্ধুদের ফোন করে ঘুম ভাঙাচ্ছেন এবং জরুরিভিত্তিতে থানকুনি পাতা সংগ্রহের তাগিদ দিচ্ছেন।

গুজবটি হলো, কেউ বলে চৈতার পীর সাহেব, কেউ বলে চত্রার সুফি সাহেব, কেউ বলে জৈনপুরী পীর সাহেব স্বপ্নে দেখে থানকুনি পাতা চাবিয়ে খেলে করোনাভাইরাস ছুঁতেও পারবে না। আর এই রাতের মধ্যেই পাতা খেতে হবে। ফেসবুকে অবশ্য এই গুজব কানে তোলেননি স্থানীয়দের কেউ কেউ। তারা গুজবে কান না দিতে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

তারা বলছেন, এমন গুজবের উৎপত্তি কোথা থেকে তা কেউ জানে না। কোনো পীর স্বপ্নও দেখেছেন বলে শোনেননি তারা।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে আরও দু’জনের মধ্যে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন আক্রান্ত দু’জনের একজন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। অন্যজন বিদেশ ফেরত একজনের সংস্পর্শে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন, বাকি ৭ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সারা দেশে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছে ৪ হাজার ৮৩৬ জন। দেশে বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬ জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছে ৪৩ জন।

পিবিএ/বিএইচ

আরও পড়ুন...