পিবিএ ডেস্ক, ঢাকা : আগামী ২ ফেব্রুয়ারি হতে শুরু হতে যাচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষা শুরু আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস করে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হাতে তুলে দিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে একাধিক প্রতারক চক্রগুলো। আর প্রধান রাস্তা হিসেবে বেছে নিয়েছে ফেসবুক, ইউটিউবসহ বেশ কিছু যোগাযোগ মাধ্যমকে। এই সামাজিক যোগাযোগ বিভিন্ন মাধ্যমে গ্রুপ ও পেজ খুলে মাত্র ১০০ থেকে ৫০০ টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন বিক্রির বিভিন্নভাবে দেয়া হচ্ছে অফার দেয়া হচ্ছে। প্রশ্নপত্র হাতে তুলে দেয়া হবে বলেও শতভাগ গ্যারান্টি দেয়া হচ্ছে। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি করছে বলে জানিয়েছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ডিভিশন।
এ পরীক্ষা সামনে রেখে গত ২৭ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জাতীয় মনিটরিং ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস ও নিরাপত্তাজনিত কারণে ২৭ জানুয়ারি থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব কোচিং সেন্টার থাকবে। প্রশ্নফাঁস রোধে আরেকটি পদক্ষেপ হচ্ছে, মোবাইল ফোনের ব্যবহার সীমিত করা। কেবল কেন্দ্র সচিব ক্যামেরাবিহীন ও ইন্টারনেট সংযোগ পায় না এমন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। এ ছাড়া পরীক্ষা ও প্রশ্ন বহনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ কোনো মোবাইল ফোনই ব্যবহার করতে পারবেন না। পরীক্ষা কেন্দ্রের চারপাশে ১৪৪ ধারা জারি করা হবে। এসব নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গের দায়ে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি পেতে হবে। যারা প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিজ্ঞাপন দিচ্ছে তাদের নজরদারি করা হচ্ছে শিক্ষামন্ত্রী এমন তথ্য জানানোও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় প্রশ্নফাঁসের একাধিক চক্র।
এবারও পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। যদি বিশেষ কোনো কারণে কারো দেরি হয় সেই ক্ষেত্রে দেরির কারণ ও পরীক্ষার্থীর নাম-ঠিকানা লিখে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। শিক্ষাথীর্দরে উদ্দেশে বলা হচ্ছে- ‘এসএসসি ২০১৯ এর প্রশ্ন দিবো, কোনো অ্যাডভান্স লাগবে না। ১০০ ভাগ কমনের পর টাকা দিবা। প্রতি প্রশ্নের টাকা পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর দিতে হবে ৩০০ টাকা করে। তাই প্রশ্ন নিতে চাইলে জলদি ইনবক্স করো।’
এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের যত প্রোলভোনই আসুক এরসবই ভুয়া বলে উল্লেখ করেছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির প্রধান ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়াউল হক।
প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে মন্ত্রণালয়ের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয় জানাতে গিয়ে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক বলেন, ‘২০১৮ সালে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল, এবার তার চেয়েও ভিন্ন কিছু কৌশল আমরা নিয়েছি। এবার প্রশ্নপত্রের সেট অনেক বেশি। তবে কত সেট হবে তা আগে থেকেই জানানো যাবে না। প্রয়োজনে ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
অন্যদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ডিভিশন থেকে জানা গেছে, সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া প্রশ্নপত্র পোস্ট ও গুজব রটনাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে সাইবার ইউনিট ও গোয়েন্দা পুলিশের সমন্বয়ে ১০টি স্পেয়ার হিট টিমও গঠন করা হয়েছে।
ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ডিভিশনের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোঃ আলিমুজ্জামান বলেন, ‘সামাজিক মাধ্যমে যে চক্রটি এইসব ভুয়া পোস্ট দিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে তাদেরকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। আমাদের টিম অভিযান চালচ্ছে। তাদেরকে আটক করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দ্রুতই তাদের আটক করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
উল্লেখ্য, এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সর্বমোট ২১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬০ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এদের মধ্যে দাখিলে অংশ নিচ্ছে ৩ লাখ ১০হাজার ১৭২জন। এসএসসি ভোকেশনালে পরীক্ষা দেবে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭২জন। সারাদেশে মোট পরীক্ষা কেন্দ্র ৩ হাজার ৪৯২টি।
পিবিএ/এআর