নওগাঁয় বিদ্যুতের খুুঁটির জন্য মহাসড়কের কাজ থেমে গেল

বিদ্যু
বিদ্যুতের খুুঁটি অপসারণ না করায় ফোরলেন রাস্তার কাজ থেমে থাকায় দূর্ভোগে পথচারী।

পিবিএ, নওগাঁ : নওগাঁ থেকে রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কের ৭৪ কিলোমিটার ফোরলেন সড়কের প্রসস্থকরণের কাজ চলছে। আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এর মধ্যে নওগাঁ শহরের প্রায় ১১ কিলোমিটার রাস্তায় বড় বাধা নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) বিদ্যুতের খুঁটি।

গত ২১ জানুয়ারী ২০১৮ তারিখে সড়ক ও জনপদ বিভাগ থেকে নেসকোকে অর্থ পরিশোধ করা হলেও খুঁটিগুলো রাস্তা থেকে অপসারণ না করায় রাস্তায় কার্পেটিং করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে রাস্তার মধ্যে ছোট ছোট খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সেই সাথে রাস্তার ধুলোয় পথচারীকে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সচেতনরা।
জানা গেছে, নওগাঁর শহরের বাইপাস ঢাকার মোড় থেকে শহরের মধ্য দিয়ে গত বছরের মার্চ মাসে আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রসস্থকরণ কাজ শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে পরবর্তিতে জেলার অন্যান্য স্থানেও কাজ শুরু হয়। পরে যেসব স্থানে কাজ শুরু হয়েছে সেগুলোর কাজ এখন প্রায় শেষের পথে। কিন্তু নওগাঁর বাইপাস ঢাকার মোড় থেকে শুরু হয়ে শহরের মধ্য দিয়ে প্রায় ১১ কিলোমিটার রাস্তার কাজ এখনও শেষ হয়নি। রাস্তা প্রসস্থকরণসহ দীর্ঘদিন থেকে খোয়া ও পাথরের কাজ শেষ হলেও রাস্তায় নেসকোর বিদ্যুতের খুঁটি থাকায় বিটুমিনাস কাজ (ওয়ারিং কোর্স/সার্ফেসিং) শুরু করা যাচ্ছে না।
বিদ্যু
বিদ্যুতের খুুঁটি অপসারণ না করায় ফোরলেন রাস্তার কাজ থেমে থাকায় দূর্ভোগে পথচারী।

কিছু বৈদ্যুতিক খুঁটি ইতোমধ্যে সরানো হলেও বেশীর ভাগ সড়কাংশে মূল পেভমেন্টের মধ্যে এখনও অনেক খুঁটি বিদ্যমান রয়েছে। কারণ বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণ করে সড়কের নীচের লেয়ার সমূহে যথাযথ কম্প্যাকশন নিশ্চিত না করে তার উপর বিটুমিনাস সার্ফেসিং কাজ করলে তা টেকসই হবে না। এতে করে দীর্ঘদিন থেকে পড়ে থাকা খোয়া ও পাথরের রাস্তা এখন বেহাল হয়ে পড়েছে। সেগুলো উঠে গিয়ে এখন রাস্তার মাঝে ছোট ছোট খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমে এ রাস্তার কাজ শুরু হলেও রাস্তায় থাকা বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণ না হওয়ায় বিলম্ব হয়ে পড়েছে। এতে রাস্তার ধুলোয় পথচারীদের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এর আশপাশের দোকানগুলোতে রাস্তার ধুলোয় স্তুপ হয়ে পড়ছে। উন্নয়নের চলাচল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নওগাঁবাসী।

নওগাঁ শহরের আরজি-নওগাঁ মহল্লার গোলাম রাব্বানী মার্কেটিং এ চাকুরি করেন। তিনি বলেন, ঢাকার মোড় থেকে নওগাঁ শহরের প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা মোটরসাইকেল নিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন। আসা-যাওয়া করতে পোশাকের উপর ধুলোর স্তুপ পড়ে এমন অবস্থা হয় যে চেনাই যায় না। এছাড়া খোয়া উঠে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে রাস্তায় ঠিক মতো চলাচলাও করা যায় না। যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।
স্থানীয়রা বলেন, ধুলাবালিতে রাস্তা পাশে থাকা যায় না। বাস-ট্রাক চলাচলে অনেক সময় রাস্তায় ধুলায় অন্ধকার হয়ে যায়। দোকানের মধ্যে ধুলার স্তুপ জমে গেছে। রাস্তায় সকাল-বিকেল ঠিকাদাররা পানি দিলেও কোন কাজেই আসছে না। রাস্তায় বিদ্যুতের খুঁটি থাকায় কাজের বিলম্ব হচ্ছে। ভোগান্তীর হাত থেকে রক্ষা পেতে এবং রাস্তার কাজটি দ্রুত শেষ করতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সচেতনরা।
নওগাঁ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হামিদুল হক বলেন, নওগাঁ থেকে রাজশাহী মোট ৭৪ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ চলছে। এর মধ্যে ১১ কিলোমিটারের মধ্যে নেসকো বিদ্যুতের খুঁটি আছে। গত বছরের জানুয়ারীতে প্রায় ৮ কোটি টাকা নেসকোকে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত খুঁটি অপসারন করা হয়নি। রাস্তা প্রসস্থকরণে খোয়া ও পাথরের কাজ অনেক আগে শেষ হলেও খুঁটি অপসারন না হওয়ায় কার্পেটিং কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। খুঁটি না সরিয়ে কাজ করলে পরবর্তিতে সেখানে আর টিকবে না। অর্থাৎ রাস্তা নষ্ট হয়ে যাবে। যার কারণে খুঁটি সরানো জরুরী হয়ে পড়েছে। এসব বিষয়ে নেসকো অবগত আছেন।
নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড নওগাঁর প্রকৌশলী সুব্রত কুমার দাস বলেন, শুধু আমাদের গাফিলতির কারণে কাজটা হচ্ছে না এটা ঠিক না। আমাদের ৬০ ভাগ কাজ ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। বাঁকী যে ৪০ ভাগ কাজ হয়ে গেছে তারা সেখানে কাজ করতে পারেন। আমাদের বিভাগ থেকে মালামালের কিছুটা সংকট আছে। যার কারণে পর্যাপ্ত মালামাল বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না। এই কারণে কাজের অগ্রগতি হচ্ছে। সম্পন্ন কাজ শেষ হতে এখনো ২/৩ মাস সময় লাগতে পারে।
পিবিএ/ বিএ/জেডআই

আরও পড়ুন...

preload imagepreload image