ডা. মো. মোবারক হোসেন : শেরপুরে প্রথমদিকে একটু ঢিলেঢালা থাকলেও ৫ এপ্রিল প্রথম রোগী সনাক্ত হওয়ার পর জনমনে ব্যাপক ভীতির সঞ্চার হয়েছে।
সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রশাসন জোরালো ভুমিকা পালন করলেও জরুরী প্রয়োজনে জনগন রাস্তায় বের হতে হয়। এমতাবস্থায় অনেকের পক্ষ থেকে শেরপুরকে লকডাউন করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও অফিসিয়ালি লকডাউন কথাটি বলা হয়নি। তবে আমি মনে করি এটা বলা জরুরি নয়। জরুরি হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব তথা শারীরিক দূরত্ব (কমপক্ষে ৩ ফুট) বজায় রাখা, এমনকি নিজের ঘরেও এই নিয়ম মেনে চলা উচিত।
লকডাউন একটি ইংরেজী পরিভাষা। বাংলায় এর অর্থ হচ্ছে- অতি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হবে না। আর জরুরী প্রয়োজনের বের হলেও সামাজিক/ শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলবে। কিন্তু সাধারনের অনেকেরই ধারনা, লকডাউন মানে কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবে না, যার যার ঘরে তালা দিয়ে রাখা হবে, রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেয়া হবে ইত্যাদি।
আর ইতিমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘরে থাকা, সামাজিক/ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যপারে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আন্তঃ জেলা যাতায়াত বন্ধ করা হয়েছে। তবে হ্যাঁ, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার (নয়ানী বাজার), কাঁচা বাজার ইত্যাদি অন্যত্র সরিয়ে সামাজিক/ শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করা যেতে পারে।
যারা অন্য জেলা থেকে (ঢাকা, নারায়নগঞ্জ) শেরপুরে নিজ বাড়িতে এসেছেন তাদের ব্যপারে এলাকায় অতিমাত্রায় ভীতি ছড়ানো হচ্ছে। তাদেরকে নানাভাবে ভয় ভীতি দেখানো বা রাস্তাঘাট বন্ধ করার ঘটনাও আছে। ফলে তারা ভয় পেয়ে পালিয়ে অন্যত্র অবস্থান করছেন। এতে সংক্রমনের ঝুকি আরও বেড়ে যাচ্ছে। অথচ তারা যদি ঘরেই থাকে তাহলে আশেপাশের জনসাধারনের ভয়ের কোন কারন নেই, সংক্রমনের ঝুকিও নেই।
এতে বুঝা যায়, সামাজিক/ শারীরিক দুরত্বের বিষয়টি এখনও আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। আমি মনে করি লকডাউনের চেয়ে সামাজিক/ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে পারলে এই মহামারি থেকে হয়তো আমরা দ্রুতই মুক্তি পাবো ইনশা-আল্লাহ। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
লেখক : উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, শেরপুর সদর, শেরপুর
পিবিএ/মোআ