কামারখন্দে শিক্ষা অফিস কর্মচারীর বিরুদ্ধে ত্রাণের নামে উৎকোচ আদায়ের অভিযোগ

আব্দুল্লাহ আল মারুফ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : ‘আমি ত্রাণের জন্য ৩৮৮ টাকা দিয়েছি। চাকুরি পেতে কোথাও কোন খরচ লাগেনি। অথচ পে-ফিকজেশন বাবদ উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটরকে ১ হাজার টাকা উৎকোচ দিতে হয়েছে।’ সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষিকা কামরুন্নাহার এসব কথা জানান।

অপরদিকে উৎকোচ দিতে অস্বীকার করায় ২ জন শিক্ষকের পে-ফিকজেশন করা হয়নি বলে তারা অভিযোগ করেছে।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে কর্মহীন, অসহায় মানুষের মধ্যে ত্রাণ দেয়ার নামে অনলাইনে বেতন নির্ধারণের (পে-ফিকজেশন) টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর সাইদুল ইসলাম ও অফিস সহকারী কাম হিসাবরক্ষক আব্দুল হাকিমের বিরুদ্ধে।

সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ২৬জন শিক্ষকের অনলাইনে বেতন নির্ধারণ (পে-ফিকজেশন) সম্পন্ন করতে অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর সাইদুল ইসলাম শিক্ষকদের কাছ থেকে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছে। টাকা ছাড়া শিক্ষকদের পে-ফিকজেশন সম্পন্ন করছেন না বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক। টাকা প্রদানে অপারোগতা প্রকাশ করায় সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্যে এখনও দুইজন শিক্ষকের পে-ফিকজেশন সম্পন্ন করেননি অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সাইদুল ইসলাম।

উপজেলার বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক রুবেল হোসেন জানান, আমি তো নতুন অফিসের কাউকে খুব একটা চিনি না। উপজেলা শিক্ষা অফিসে পেফিকজেশন সম্পন্ন করতে গেলে একজন অফিস সহকারি আমার কাছ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা দাবি করেন। আমি টাকা দেয়নি বলে আমার কাজ সে করে দেননি। আমি এখনও পেফিকজেশন সম্পন্ন করতে পারি নাই।

একই বিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক এমদাদুল হক জানান, সরকারি শিক্ষকের চাকরি পেয়েছি। এক টাকা কোথাও ঘুষ লাগেনি। মেধার ভিত্তিতে চাকরি দিয়েছে সরকার। পেফিকজেশন বাবদ অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর আমার কাছে ১ হাজার টাকা চাইলে আমি তাকে দেয়নি বলে সে আমার কাজ করে দেননি। আমি এর আগে বৈশাখী ভাতার ২০ ভাগ ৩৮৮ টাকা ত্রাণের জন্য দিয়েছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর সাইদুল ইসলাম জানান, আমি ত্রাণের জন্য সদ্য নিয়োগপ্রাপ্তদের কাছ থেকে ৩৮৮ টাকা করে নিয়েছি। পেফিকজেশন বাবদ আমি কোন টাকা নেয়নি, অফিস সহকারি কাম হিসাবরক্ষক আব্দুল হাকিম এসব লেনদেন করেছেন।

জানতে চাওয়া হলে অফিস সহকারী কাম হিসাবরক্ষক আব্দুল হাকিম উৎকোচ গ্রহনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘পে-ফিকজেশন বাবদ আমি টাকা নেব কেন? আমি কোন টাকা নেয়নি। তবে কয়েকজনের কি কারনে পে-ফিকজেশন হয়নি এব্যপারে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। ’

উপজেলা শিক্ষা অফিসার সন্ধ্যা রানী সাহা বলেন, উৎকোচ গ্রহনের বিষয়টি আমার জানা নেই। সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা যদি টাকা নেওয়ার ব্যাপারে আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করে তাহলে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

পিবিএ/আব্দুল্লাহ আল মারুফ/মোআ

আরও পড়ুন...