পিবিএ, ঢাকা : ‘আমরা ৪ মাস হলো বেতন পাই না। পরিবার নিয়ে খুবই কষ্টে দিন কাটছে। একমাত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রীই এখন আমাদের শেষ ভরসা। সভাপতি কারো কথাই মানছেন না। শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান লিখিত শোকজ করার পরও সমস্যার সুরাহা হয়নি। পছন্দের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না পাওয়ায় তিনি ৫০ জন শিক্ষকের বেতন ৪ মাস যাবৎ আটকে রেখেছেন।’ আবেগজড়িত কন্ঠে এসব কথা বলেন শ্যামপুর বহুমুখী হাই স্কুল এন্ড কলেজের সহকারি শিক্ষক মোঃ নেছার উদ্দিন।
গর্ভনিং কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, সভাপতির পছন্দের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় শিক্ষকদের বেতন আটকে রেখেছেন। স্কুলে ৩৪ জন এমপিওভুক্ত ও ১৬ জন খন্ডকালীন শিক্ষক আর কর্মচারি ৮ জন। এমপিও বেতন ৪ মাস স্কুলের বেতন ৮ মাস যাবৎ বকেয়া রয়েছে। এরই মাঝে করোনা মহামারির প্রাদূর্ভাব। শিক্ষকরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। যেহেতু বোর্ড, মন্ত্রণালয় কাহারো নির্দেশই তিনি শুনছেন না। সেক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখন আমাদের বাঁচাতে পারেন।
স্কুলের সভাপতি প্রকৌশলী এস এম আজহারুল ইসলামের সাথে পিবিএ’র কথা হয় মুঠোফোনে, বেতন আটকানোর বিষয়টি স্বীকার করে তিনি জানান, ‘বোর্ড প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিবার কে ? আমি বিল সাক্ষর করে বোর্ডে জমা দিয়ে দিয়েছি। তারা এসে বেতন দিয়ে যাক।’
শিক্ষাবোর্ডে জমা শিক্ষকদের অভিযোগ এবং খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে সাবেক প্রধান শিক্ষক অলিউর রহমান চাকুরি থেকে বরখাস্ত হন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক যিনি ছিলেন চাকুরীর মেয়াদ শেষে তিনি অবসরে যান। পরবর্তিতে বোর্ডের মৌখিক নির্দেশে গর্ভনিং কমিটির রেজুলেশনের মাধ্যমে সিনিয়র সহকারি শিক্ষিকা মনিজা আহমেদ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। সভাপতি তাকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে শিক্ষকদের বেতন আটকে দেন। ৪ মাসেও সেই জট খুলেনি। শিক্ষকরা বিষয়টি লিখিতভাবে শিক্ষা বোর্ডে জানান। সবকিছু যাচাই সাপোক্ষে ১২ জানুয়ারী ২০২০ তারিখে শিক্ষাবোর্ড লিখিতভাবে সভাপতিকে অপসারনের শোকজ করেন। এতেও তিনি সমস্যা সুরাহা না করে আদালতে মামলা করেন।
আরও জানা যায়, একই বিষয়ে শিক্ষকরা ১৩ ফেব্রুয়ারী মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করেন। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে তৎক্ষণাত শিক্ষা সচিব মাহবুব হোসেন বোর্ড চেয়ারম্যানকে সমাধানের নির্দেশ দেন। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পেয়ে ২০ ফেব্রুয়ারী ৩০ কর্ম দিবসে কেন কমিটি ভেঙে দেয়া হবে না এই মর্মে পুনরায় সভাপতিকে শোকজ করেন। এতেও সমস্যা সমাধান হয়নি।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনিজা আহমেদ বলেন, তিনি চান এই মহামারির সময় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে হলেও সভাপতি শিক্ষকদের বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা করবেন।
এ ব্যপারে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি পিবিএকে বলেন, অফিস কার্যক্রম চালু হলে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
পিবিএ/মোহাম্মদ আলম