পিবিএ,চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গায় সব ধরনের আবাদকে ছাপিয়ে ভুট্টার অবস্থান এখন শীর্ষে। সারা বিশ্ব এখন লকডাউনে। লকডাউন উপেক্ষা করে চুয়াডাঙ্গা প্রায় আড়াই লাখ ভুট্টা চাষি মাঠে ময়দানে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সরকার ঘোষিত সামাজিক দূরত্ব মেনে ভুট্টা কেটে ঘরে তোলার কাজ করছেন কৃষকরা। ইতোমধ্যে জেলার ৫০ ভাগ ভুট্টা কাটার কাজ শেষ করেছে। চলতি মাসেই বাকী ৫০ শতাংশ শেষ হবে। তবে সঠিক সময়ে বিক্রি করা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে কৃষক।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার কৃষকদের প্রধান আবাদি ফসল ভুট্টা। জেলার মোট আবাদি জমির পরিমাণ ৯৭,৫৮২ হেক্টর। যার অর্ধেক ভুট্টার চাষ হয়। সারাদেশে মোট উৎপাদিত ভুট্টার ৫ ভাগের একভাগ চাষ হয় চুয়াডাঙ্গায়।
চুয়াডাঙ্গায় চলতি মৌসুমে ৪৬ হাজার ১২১ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এবার আবাদ হয়েছে ৪৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চাষ বেড়েছে ২ হাজার ৩৭৯ হেক্টর।
এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদরে ১৫ হাজার ১২০ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ১৩ হাজার ৭০০, দামুড়হুদায় ১৪ হাজার ৪৬০ ও জীবননগরে ৫ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০.৩২ মেট্রিক টন।
এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদরে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৮ টন, আলমডাঙ্গায় ১ লাখ ৪১ হাজার ৩৮৪, দামুড়হুদায় ১ লাখ ৪৯ হাজার ২২৭ ও জীবননগরে ৫৩ হাজার ৭৬৭ টন। এ হিসাবে জেলায় মোট উৎপাদন হবে ৫ লাখ ৫২০ টন ভুট্টা। যার বাজার মূল্য ৯ শ কোটি টাকা।
চলতি রবি মৌসুমে ৪৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে। সেখানে ২০০২ সালে আবাদকৃত জমির পরিমাণ ছিল মাত্র ৫৬৫ হেক্টর। অর্থাৎ গত দেড়যুগে জেলায় আবাদ বেড়েছে প্রায় ৮৬ শতাংশ।
কৃষকরা জানান, খরচ বাদ দিয়ে বিঘাপ্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা লাভ থাকে। বছরে দুবার ভুট্টা চাষ করা যায়। নভেম্ব^র-ডিসেম্ব^র এবং মে-জুন ভুট্টা চাষের উপযোগী সময়। শীতকালে ফলন বেশি, তাই চাষিরা এ সময় আবাদও করে থাকেন বেশি।
চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জের ভুট্টা ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন জানান, এখন ভুট্টা ক্রয়-বিক্রয়ের ভরা মৌসুম। কিন্তু করোনার কারণে আমদানি নেই। কৃষকের খুব বেশী টাকার প্রয়োজন না হলে কেউ ভুট্টা বিক্রয় করতে আসছেন না। রয়েছে পরিবহন সংকট। তবে ১ মাস আগে প্রতিমন ভুট্টা ৮‘শ টাকা দরে বিক্রি হলেও, বর্তমানে ৬৮০ হতে ৭২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সুফি রফিকুজ্জামান জানান, জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল ভুট্ট্রা। ভুট্ট্রা চাষে প্রায় আড়াই লাখ চাষি জড়িত। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।
পিবিএ/সনজিত কর্মকার/এএম