ঢামেকে নবজাতক কেনার সময় এক নারী আটক

পিবিএ,ঢামেক: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এক দম্পতির কাছ থেকে নবজাতক কেনার সময় এক নারীকে আটক করেছে হাসপাতালের আনসার ও নার্সরা। আটককৃত নারী সোনিয়াকে (২৮) শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে এই বাচ্চা কেনাবেচার ঘটনা ঘটে।
গাজিপুর টঙ্গি রেলস্টেশন এলাকার টুকু মিয়া ও জোসনা বেগমের ২য় সন্তান মুসা। গতকাল মঙ্গলবারই সিজারের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়। বাবা-মা ২জনই ভিক্ষাবৃত্তি করেন।
জানা যায়, সোমবার (২৮ জানুয়ারী) হাসপাতালের ২১২ নম্বর গাইনি বিভাগে ভর্তি হয় জোসনা বেগম। এরপর গতকাল সিজারের মাধ্যমে তার একটি ছেলে বাচ্চা হয়। এরপর তাকে ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের ২৭ নম্বর বেডে স্থানান্তর করা হয়।
হাসপাতালের ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স সুপর্ণা হালদার জানান, সকাল ১০ টার দিকে সোনিয়া নামের ওই নারী হাসপাতালে আসেন। তখন তিনি জোসনার খালাতো বোন হিসেবে সবাইকে পরিচয় দেন। তবে আমাদের সন্দেহ হওয়ায় তাকে নজরদারিতে রাখা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৫ টার দিকে ওয়ার্ডের নার্সরা কাজে ব্যস্ত থাকায় ও ওয়ার্ডের গেটে আনসার একটু দূরে যাওয়ায় ওই সুযোগে জোসনা ও তার বাচ্চা সহ সব জিনিসপত্র নিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাচ্ছিলো সোনিয়া। এর অল্প কিছুক্ষণ পরে দায়িত্বরত নার্স টুম্পা হাওলাদার ওয়ার্ডে এসে বাচ্চা ও বাচ্চার মা’কে দেখতে না পেয়ে দৌড়ে হাসপাতাল থেকে বেরোনোর গলিতে যায়। সেখানে গেলে বাচ্চা সহ তাদের দেখত পায়। পরে তাদেরকে ধরে আবার ওয়ার্ডে নিয়ে আসেন।
নবজাতকটির মা জোসনা বেগম জানান, অনেক আগে কমলাপুরে সোনিয়ার সাথে তাদের পরিচয় হয়। এরপর জোসনা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ৩/৪ মাস পরে সোনিয়া তাদের বাচ্চাটা কেনার জন্য ৫০ হাজার টাকার অফার করেন। এরপর তাদের হাতে ৩ হাজার টাকা দেন। আজকে ওই বাচ্চা নেওয়ার জন্যই সে হাসপাতালে এসেছিলো।
বাচ্চাটির বাবা টুকু মিয়া জানান, তিনি নিজে সুইপারে কাজ করেন, আবার কখন ভিক্ষাবৃত্তি করেন। তার স্ত্রীও একই কাজ করেন। এটি তাদের ২য় বাচ্চা। প্রথম সন্তান জুয়েলকে (৬) পঞ্চগড়ের একটি এতিমখানায় দিয়ে দিয়েছেন। তাদের ২জনেরই দ্বিতীয় বিয়ে এটি। গ্রামের বাড়ি রংপুর মিঠাপুকুরে।
আটককৃত সোনিয়া দাবী করেন, তার স্বামীর নাম মোঃ মিজান। তার বাসা পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার নাসির উদ্দিন সরদার লেনে।জোসনা তার বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। অন্তসঃত্ত্বা হবার পর থেকেই তিনি জোসনাকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করছে। আজকে বাচ্চাটির বাবা টুকু তাকে ফোন করার পরই তিনি হাসপাতালে এসেছেন বলে দাবি করেন।
শাহবাগ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) ভজন বিশ্বাস জানান, সোনিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পিবিএ/এইচএ/এমএসএম

আরও পড়ুন...