মেস ভাড়া শিথিলের দাবি যবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের

JUST

মোসাব্বির হোসাইন,যবিপ্রবি প্রতিনিধি: নোভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব, থেমে গেছে অর্থনীতির সকল চালিকাশক্তি। থেমে গেছে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সকল শিক্ষার্থীদের আয়ের উৎস টিউশনি বা পার্ট টাইম জব। বাসায় লকডাউন অবস্থায় থেকে নিজের ও পরিবারের ভরণপোষণ করাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের। এ অবস্থায় মেস ভাড়া পরিশোধ করা নিয়ে বিপাকে পড়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। আগামী যতদিন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় ততদিন মেস ভাড়া শিথীলের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। ভাড়া মওকুফ নিয়ে গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম অপূর্ব যবিপ্রবির উপাচার্যকে মাধ্যম করে জেলা প্রশাসক বরাবর খোলা চিঠিতে লেখেন, করোনাকালীন সময়ে বিপাকে পড়েছে সকল শ্রেণিপেশার মানুষ, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও এই সমস্যার বাইরে নয়। দেশে ৮ই মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর প্রায় দুমাসেও কমেনি এর প্রকোপ। ১৮ ই মার্চ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়। কবে নাগাদ ছুটি শেষ হবে বিষয়টি ঘোর অনিশ্চয়তায়।

বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার পরপরই যশোর ত্যাগ করেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত আছেন প্রায় সাড়ে চার হাজারের মতো শিক্ষার্থী। দুই তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীই থাকেন যশোর শহরের বিভিন্ন মেসে, হোস্টেল কিংবা বাসা ভাড়া নিয়ে।

জেলা প্রশাসককে অবগত করে খোলা চিঠিতে অপূর্ব আরও জানান, যশোর জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, আশেপাশের জেলা এবং অন্যান্য বিভাগ থেকে প্রায় বিশ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। তারা অধ্যয়নরত আছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঐতিহ্যবাহী এম এম কলেজ, যশোর মেডিকেল কলেজ, যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, ডাঃ আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, যশোর সরকারি টেকনিক্যাল কলেজসহ অন্যান্য অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এমন অনেক শিক্ষার্থীই আছেন যারা নিজেরা টিউশনি করে চলেন, বাড়িতেও টাকা পাঠান। এই মহামারী সময়ে বাসায় চলে যাওয়ায় তাদের নিজেদের আয় বন্ধ হয়ে গেছে, পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। এমতাবস্থায় তাদের পক্ষে মেস ভাড়া পরিশোধ করা কঠিন হয়ে উঠেছে।

প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বলেছেন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিত না হলে প্রায় সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে পারে। যদি সেটাই হয়, এবং ভাড়া পরিশোধ করতে হয় তাহলে সব শিক্ষার্থীদের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিজ বসতবাড়ি থেকেও হাস, মুরগী, গরু-ছাগল, এমনকি জমি বিক্রি করে সর্বস্ব উজাড় করে ভাড়া পরিশোধ করতে হবে।

এ বিষয়ে প্রতিবেদক বিষয়টি যবিপ্রবি উপাচার্যকে অবগত করলে তিনি জানান, “আমি মেস,বাসা মলিকদের অনুরোধ করবো এইসময়ে তারা যাতে তাদের মানবিকতা থেকে শিক্ষার্থীদের কাছে ভাড়া না নেন। আমি আগামীকালই বিষয়টি যশোরের রাজনীতিবিদ, নেতৃস্থানীয় ও প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে জেলা প্রসাশক মহোদয়কে অবহিত করবো এবং জোর দাবি জানাবো এ বিষয়ে যাতে খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেন। প্রয়োজনে মেস ও বাসার মালিকদের সাথেও আমি নিজে কথা বলবো।

পিবিএ/বিএইচ

আরও পড়ুন...