মুহম্মাদ ওমর ফারুক: করোনাভাইরাসে আজ বিপন্ন মানবজাতি। এ মহামারী থেকে রক্ষা পেতে আমরা হাত তুলছি মহান আল্লাহর দরবারে।
আল্লাহ অসীম দাতা ও দয়ালু। সৃষ্টজীব হিসেবে আমরা তাঁর কাছ থেকে প্রতিদিন অসংখ্য নিয়ামত পেয়ে থাকি। এসব নিয়ামতের অন্যতম হলো দোয়া কবুল হওয়া। মানুষ হিসেবে আমরা যে কোনো সমস্যায় পড়লেই আল্লাহকে ডাকি। আর আল্লাহও তাঁর প্রিয় সৃষ্টি মানুষের দোয়া কবুল করার জন্য সর্বদাই প্রস্তুত থাকেন। বিশেষত, দিনরাতের কিছু মুহূর্ত ঠিক করে রেখেছেন যখন দোয়া কবুল হয়। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।’ তিরমিজি। প্রতিটি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দোয়া কবুল হয়। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘প্রতিদিন রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ সবচেয়ে নিচের আসমানে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আমাকে ডাকছ, আমি তোমার ডাকে সাড়া দেব। কে আমার কাছে চাইছ, আমি তাকে তা দেব। কে আছ আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী, আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।’ মুসলিম।
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘শেষ রাতের যে কোনো সময় কোনো মুসলিমের এমনটা হয় না যে, সে পৃথিবী বা পরকালের জন্য আল্লাহর কাছে কিছু চাইল আর তাকে তা দেওয়া হলো না। আর এটা প্রতিটি রাতেই ঘটে।’ মুসলিম।
উবাদা বিন সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে কেউ রাতের বেলা ঘুম থেকে জাগে আর বলে- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির। আলহামদুলিল্লাহি ওয়া সুবহানাল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ এবং এরপর বলে, আল্লাহুম মাগফিরলি (আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন) অথবা আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করে, তাহলে কবুল করা হবে।’ বুখারি। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে সময়টাতে বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী অবস্থায় থাকে তা হলো সিজদার সময়। তোমরা সে সময় আল্লাহর কাছে বেশি চাও।’ মুসলিম। আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘ইয়া রসুলুল্লাহ! কোন সময়ের দোয়া দ্রুত কবুল হয়? তিনি বললেন, রাতের শেষ সময়ে ও ফরজ নামাজের পরে।’ তিরমিজি। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘দুই সময়ের দোয়া ফেরানো হয় না। আজানের সময়ের দোয়া ও বৃষ্টি পড়ার সময়কার দোয়া।’ আবু দাউদ। আসলে আল্লাহতায়ালা আমাদের দোয়া কবুলের যে সুযোগগুলো দিয়েছেন তা আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। আমাদের উচিত তা কাজে লাগানো। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
পিবিএ/এএম