লকডাউন সিথিল করার সরকারি সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে যুক্তিসঙ্গত। মার্কেট, পোশাক কারখানা বা ক্ষুদ্র ব্যবসা চালু করাও উচিত।
সরকার দেখে দশ দিকে। সরকার নিশ্চয়ই বাংলাদেশের মানুষের আর্থ সামাজিক পরিস্থিতির ব্যপারে একজন বা একাধিক ব্যক্তি বিশেষের চাইতে বেশী ওয়াকিবহাল। তাই লকডাউন শিথিল, মসজিদ খোলার সরকারী সিদ্ধান্ত সঠিক।
মানুষ হিসাবে প্রতিটি মানবের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি হচ্ছে মৃত্যু জেনেও সে নানাবিধ নেশায় ছোটে। করোনার ভয় ক্ষুধার চাইতে বেশী হতেই পারে না। এই করোনা কালে তা প্রমাণিত।
বিশ^ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বিশে^র হতদরিদ্র মানুষের অর্ধেক বাস করে ৫ দেশে। বাংলাদেশের নামও এই তালিকায় আছে। তাদের পরিসংখ্যান বলে বাংলাদেশে ১ কোটি ৬০ লাখের বেশী মানুষ হতদরীদ্র। যাদের দৈনিক আয় ১ ডলার ৯০ সেন্টের কম। দরিদ্রের সংখ্যা আরো বেশী।
প্রিয় পাঠক এটাই বাস্তবতা। তাহলে এই হতদরীদ্র বা দরীদ্র মানুষকে কিভাবে লকডাউনে রাখা সম্ভব। এ জন্যই হয়ত সরকার পোশাক কারাখানা, মার্কেট বা ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরে খোলার ব্যপারে সিথিল মনোভাব দেখাচ্ছে। এটাই করা উচিত।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে বসুন্ধরা, যমুনা এবং নিউমার্কেট না খোলার ঘোষণা দিয়েছে। কারন সেখানোতো ঔ হতদরীদ্র, দরীদ্র বা মধ্যবিত্ত যায় না। এটা ঐসব বিপনীবিতান মালিক কর্তৃপক্ষ বেশ ভালভাবেই জানে। উচ্চ বিত্তরা যায় বিলাসিতার কেনাকাটা করতে। এখন তারা অনলাইনেই সেটা সারছেন। তাই মার্কেটে না বেরুলেও চলবে।
যারা গেলো গেলো বলে রব তুলছেন। তাদের ঘরে নিশ্চয়ই পর্যাপ্ত খাবার রয়েছে। আরো বছর দুয়েক পোশাক না কিনলেও তাদের চলে। যে কারনে লকডাউন থাকলেও তাদের কোন হাপিত্যেস নেই।
গত ঈদে একটি নতুন জামা কিনেছে যে দরীদ্র মানুষটি। সারা বছরই হয়ত আর কেনা হয়নি। তারতো একটি জামা লাগবেই। অথবা ত্রাণ যা পাচ্ছে তা অপ্রতুল। হতে পারে পরিবারের শিশু সদস্যের দুধ কেনার অর্থ নেই। তারতো টাকা রোজগার প্রয়োজন। ক্ষুধার্তের কাছে পূর্ণিমার চাদ ঝলশানো রুটির মত মনে হয়। কবির কথা ফেলনা নয়।
আসুন আমরা সামাজিক(ক্ষেত্র বিশেষে শারীরিক) দূরত্ব মেনে চলি। অন্যকে সচেতন করি। বার বার সাবান পানিতে হাত মুখ পরিস্কার করি। হাঁচি বা কাশি এলে কুনইতে ঢাকি। রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করি।
করোনা ভাইরাস বিস্তার প্রতিরোধে সকলের সম্মিলিত সচেতনতাই হতে পারি এই যুদ্ধ জয়ের মূল হাতিয়ার।
পিবিএ/ শতাব্দী আলম