পিবিএ,চট্টগ্রাম: তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘ঢাকা অঞ্চলের তুলনায় চট্টগ্রাম অঞ্চলে এখনও করোনাভাইরাস পরিস্থিতি অনেক ভালো। কিন্তু গত ২৩ এপ্রিলের পর থেকে সংক্রমণ ও মৃত্যু বৃদ্ধি পেয়েছে।’
বৃহস্পতিবার (৭ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় সভায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য মহানগরের হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল সরকারি ব্যবস্থাপনায় চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে ২০টি আইসিইউ ইউনিট, ৬০টি আইসোলেশন বেডসহ ১০০টি বেড স্থাপন করা হবে। এছাড়া চট্টগ্রামে যাতে প্রতিদিন অন্তত ৫০০ নমুনা পরীক্ষা করা হয় সেজন্য কাজ করা হচ্ছে।’
এ সময় লকডাউন শিথিল করার বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে ইতালি, স্পেনসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই এখনও প্রতিদিন ২৫০-৩০০ মানুষ মৃত্যুবরণ করছে সেখানেও লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। কারণ জীবন রক্ষার জন্য জীবিকাও রক্ষা করতে হবে। কিন্তু অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করেই এ কাজগুলো করতে হবে। সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে দোকানপাট সীমিত আকারে ১০টা থেকে ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কেনা-বেচা করতে হবে। প্রতিটি শপিংমল, বিপণীবিতানের প্রবেশ পথে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার পাশাপাশি ডিজইনফেকশন চেম্বার বসানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
খাদ্য সংকটের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশের এক তৃতীয়াংশ মানুষকে নানাভাবেই সহায়তার আওতায় এনেছেন। পৃথিবীর অনেক দেশই বৈশ্বিক এ দুর্যোগ মুহূর্তে এটা করতে পারেনি। করোনা পরিস্থিতির আজকে দু’মাস হতে চললেও বাংলাদেশে এখনও একজন মানুষও অনাহারে মারা যায়নি। শুধুমাত্র সরকারের পক্ষ থেকে সাহায্য সহযোগিতা করা হচ্ছে তা কিন্তু নয়। সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি, বিত্তশালী ব্যক্তিসহ অনেকেই মানুষের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন। এটিই আমাদের সংস্কৃতি এবং সেই সংস্কৃতির ধারাবাহিকতায় সবাই এগিয়ে এসেছেন।’
তথ্যমন্ত্রী এ দুর্যোগ মুহূর্তে অসহায়দের পাশে থাকতে সবার প্রতি অনুরোধ জানান। ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে যাতে সঠিক মানুষ ত্রাণ পায় এবং যারা চাইতে পারেনা তারাও যাতে ত্রাণ পায় সেজন্য জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে সমন্বয় করার নির্দেশ দেন।
এছাড়া তিনি বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত এলাকা লকডাউনের জন্য অনেক পুলিশ সদস্যের দরকার হচ্ছে। এতে পুলিশের অন্যদিকে দায়িত্বের ব্যাঘাত ঘটছে। এক্ষেত্রে লকডাউনকৃত এলাকায় কিংবা ভবিষ্যতে লকডাউনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আরও বেশি সংখ্যক আনসার এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
সমন্বয় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সংসদ সদস্য বেগম ওয়াসিকা আয়েশা খান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামাল মোস্তাফা, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক মো. হাসান শাহরিয়ার কবির, জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হকসহ অন্যান্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পিবিএ/এমআর