পিবিএ,নড়াইল: দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে হাতে থাকা ব্রেসলেটই নিলামে তুলেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। উদ্দেশ্য করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবা হেনেছে বাংলাদেশে তাইতো করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আরো দৃঢ়ভাবে শামিল হওয়ার জন্য তার প্রিয় ব্রেসলেট নিলামে তোলেন তিনি। মাশরাফির সেই ব্রেসলেট ৪২ লাখ টাকা মূল্যে কিনে নেয় আইপিডিসি ফিন্যান্স। এর ভিত্তিমূল্য ছিল ৫ লাখ টাকা। ব্রেসলেটটি পুনরায় তাকে দেয়ার ঘোষনাও দেন ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান। এদিকে নড়াইলবাসীর পাশে থাকার জন্য ভালোবাসার ব্রেসলেটটি নিলামে তোলায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভালোবাসায় সিক্ত করছেন তাদের প্রিয় ম্যাশকে। ম্যাশ ভক্তরা নিলামে ক্রয়কৃত ব্রেসলেটটি তাকে উপহার দেয়ার ঘোষনা দেয়ায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন ম্যাশ ভক্ত ক্রিকেটপ্রেমীরা।
ফেইসবুকে ‘ÔAuction 4 Action Õ’ পেজ-এ নিলাম শেষে বিজয়ীর ঘোষণা দেয়া হয় সোমবার প্রথম প্রহরে। ব্রেসলেট কিনে নিয়েছে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বিএলএফসিএ। নিলামের সর্বোচ্চ দর ছিল ৪০ লাখ। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাড়িয়ে দিয়েছে আরও ৫ ভাগ। তাতে চূড়ান্ত মূল্য দাঁড়িয়েছে ৪২ লাখ টাকা।
এই অর্থ দিয়ে মাশরাফির হাতেসড়া সংগঠন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সহায়তা করা হবে করোনাভাইরাসের এই দুঃসময়ে অসহায় মানুষদের।
তবে নিলামে বিক্রি হলেও ব্রেসলেট থাকবে মাশরাফির হাতেই। বিএলএফসিএর চেয়ারম্যান মমিন উল ইসলাম জানিয়েছেন, এই ব্রেসলেট কিনে নিয়ে তারা আবার মাশরাফিকেই উপহার দিতে চান।
দেড় যুগ আগে কাছের এক বন্ধুর মামাকে দিয়ে মাশরাফি বানিয়ে নিয়েছিলেন এই ব্রেসলেট। এরপর এই দীর্ঘ সময়ে ব্রেসলেটটি হাত থেকে খুলেছেন খুব কম সময়ের জন্য। নিলামে তোলার সময় তিনি বলেছিলেন, এই ব্রেসলেট তার জীবনের কতটা জুড়ে আছে।
এাশরাফি বিন মর্তুজা এসময় বলেন, গত ১৮ বছরে খুব কম সময়ই এটি খুলেছি হাত থেকে। অপারেশনের সময়, এমআরআই করানোর সময় খুলতে হয়েছে। আর কয়েকটি ম্যাচ বা কিছু সময়ের জন্য খুলেছি শুধু। তবে যখনই খুলেছি, কখনোই স্বস্তি বোধ করিনি। মনে হতো, কী যেন নেই, খালি খালি লাগত। আমার সবসময়ই মনে হয়েছে, এটি আমার সৌভাগ্যের প্রতীক। আমার ক্যারিয়ারের সব উত্থান-পতনের স্বাক্ষী এই ব্রেসলেট। যত লড়াই করেছি, মাঠের ভেতরে-বাইরে যত কিছুর ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে, সব কিছুর স্বাক্ষী এটি। আমার ১৮ বছরের সুখ-দুঃখের সাথী। আমার অনেক আবেগ-ভালোবাসা জড়িয়ে এটিতে, এই ব্রেসলেটকে আসলে ব্যাখ্যা করা আমার জন্য খুব কঠিন।
উল্লেখ্য, নড়াইল এক্সপ্রেসের চেয়ারম্যান মাশরাফি বিন মর্তুজা বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য ২০১৭ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত করেন। সেই থেকে জেলার মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে নড়াইল এক্সপ্রেস।
পিবিএ/শরিফুল ইসলাম /এএম