অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েছে বরগুনায় নদ-নদীর পানি

পিবিএ,বরগুনা: বরগুনার প্রধান তিনটি নদীতে পানি অস্বাভাবিক মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, জেলার প্রধান তিনটি নদীর (পায়রা-বিষখালী-বলেশ্বর) পানি বিপদসীমার ৩৩ সে. মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চলের শত শত ঘর-বাড়ি।

জেলার ৬২৮টি সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার দুই লক্ষাধিক মানুষ। করোনাভাইরাসের কারণে কিছুটা হলেও মানা হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহল থেকে দেয়া হচ্ছে খাদ্য সহায়তা। তবে ঘর-বাড়ির মায়া ত্যাগ করে এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে যায়নি অনেকে।

বরগুনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ খবর লেখা পর্যন্ত (দুপুর দুইটা) জেলার ৬২৮টি সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার অন্তত দুই লক্ষাধিক মানুষ। যারা আশ্রয় নিয়েছে তাদেরকে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে শুকনা ও রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জীবাণুনাশক স্প্রে, হাত ধোয়ার জন্য সাবান-পানির ব্যবস্থা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও খাবার পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্যোগ মোকাবিলার পাশাপাশি ২০০ টন চাল ও ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ৪২টি মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ও বিদ্যুৎ বিভাগের ৩টি কুইক রেসপন্স টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছেন প্রায় ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক।

এ দিকে মঙ্গলবার রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে সদর উপজেলার পরীরখাল এলাকার মো: শহিদুল ইসলাম (৬৫) নামের এক হোটেল ব্যবসায়ী হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন।

এম বালিয়াতলী ইউপি চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ সেলিম জানান, ওই বৃদ্ধ অসুস্থ ছিলেন। তিনি আম্পানের কারণে নিরাপদ আশ্রয় নিতে পরীরখাল আশ্রয়কেন্দ্রে আসছিলেন। আসার পথে অসুস্থতা বেড়ে গেলে রাত ১০টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। বুধবার সকালে নিহতের পরিবারের বাড়ি গিয়ে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার।

দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) বরগুনা সদর উপজেলার টিম লিডার জাকির হোসেন মিরাজ বলেন, বরগুনার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সিপিপির সদস্যরা মাইকিং করে মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসনের পাশাপাশি সিপিপির কর্মীরা তৎপর রয়েছে।

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলায় আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সিপিপি, রেডক্রিসেন্টের কর্মীরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। দুর্যোগ আঘাত হানার আগেই বেড়িবাঁধের বাইরের লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা সম্ভব হবে।

তিনি আরো বলেন, শুধু জেলা প্রশাসনই নয় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও রাজনৈতি নেতৃবৃন্ধসহ জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তারা সকল মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসবে। যারা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করবেন, তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পিবিএ/এএম

আরও পড়ুন...