সংসদ বসানোর নৈতিক বৈধতা নেই : মির্জা ফখরুল

Mirja Fakrul Islam Alamgir

পিবিএ, ঢাকা : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশ ও জাতিকে বাঁচান। সমস্যা আজকে জাতির, সমস্যা বিএনপির নয়। আজকে দেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, জাতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আপনি যা অর্জন করেছেন সমস্ত অধিকার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, আর আপনারা বলছেন, বিএনপির সমস্যা। বিএনপির কোনও সমস্যা নেই। বিএনপি ইজ ইউনাইটেড।’ আজ শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে মানবধিকার সংগঠন ‘আওয়াজ’ আয়োজিত ‘সহিংসতা ও নারী: বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যে দেশে জনগণের কোনও নিরাপত্তা নেই, সংবিধানসম্মত একটি নির্বাচন করতে গিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে দখল করে ব্যবহার করা হয়, সেখানে নারী নির্যাতনের মতো বিষয়গুলোর বিচার পাওয়া যাবে এটা মনে করার কোনও কারণ নেই।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা সবাই জানি, গত ১০ বছর ধরে বাংলাদেশে একটি দলের শাসন চলছে। তারা ছলে বলে কৌশলে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য রাষ্ট্রকে পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে দেওয়ার উপক্রম করেছে। গত নির্বাচনে দেখলাম অত্যন্ত সচেতনভাবে তারা ক্ষমতা নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করেছে। এর চেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার আর কিছু হতে পারে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে সংসদ চলছে, এই সংসদ কার কথা বলবে? এই সংসদ কী নারীদের ওপর যে নির্যাতন হচ্ছে সে বিষয়ে কথা বলবে? বলবে না, কারণ হচ্ছে, তাদের লোকেরাই নির্যাতন করছে। তাদের এই সংসদ বসানোর নৈতিক কোনও বৈধতা নেই। কারণ তারা নির্বাচিত নয়। নির্বাচনের নামে গোটা জাতির প্রতি একটি নিষ্ঠুর প্রহসন হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশনের টকশোগুলোতে তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা বিএনপি আর ঐক্যফ্রন্টের দোষত্রুটি খুঁজে বেড়ান। অথচ আওয়ামী লীগ যে ইচ্ছাকৃতভাবে রাষ্ট্রকে ধ্বংস করে দিলো, সংবিধানকে লঙ্ঘন করলো সে বিষয়গুলো বলার সাহস তারা পান না।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘একটা ফ্যাসিবাদ যখন চলে তার সর্বপ্রথম কাজটা কী থাকে? ভয় সৃষ্টি করা, ত্রাস সৃষ্টি করা। সব জনগণের মধ্যে একটা ভীতি ছড়িয়ে দেওয়া। এই ভীতিতে বাস-রেস্টুরেন্টে কেউ কথা বলতে চান না। তাদের সফলতা এই জায়গায়, তারা একটি ভয়ভীতি ছড়িয়ে দিয়েছে। ফলে এখন আর কেউ কথাই বলতে চায় না।’ ফখরুল বলেন, ‘আজকে ইকোনোমিস্টের মতো পত্রিকা ক্যাপশন করছে,গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ গোটা পৃথিবীর মিডিয়া জানে যে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছে।’

খালেদা জিয়াকে একটি নির্জন কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এটা কি তার প্রাপ্য? তিনি জামিন পেয়েছেন কিন্তু তাকে তা দেওয়া হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৯৮ হাজার মামলায় ২৭ লাখ আসামি করা হয়েছে।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য প্রফেসর সাহিদা রফিক। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন— প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী, প্রফেসর ড. তাজমেরী ইসলাম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিলকিস ইসলাম প্রমুখ।

পিবিএ/ জিজি

আরও পড়ুন...