পিবিএ, রাজশাহী : তালাক দেওয়ার পর এবার সাবেক দ্বিতীয় স্ত্রী লিজার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করলেন সাংসদ এনামুল হক।
তবে লিজার দাবি, তার সাক্ষর জাল করে ভুয়া তালাকনামা সাজানো হয়েছে। তিনি এর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করবেন। তিনি এখনো এমপি এনামুলের বৈধ স্ত্রী।
গত বৃহস্পতিবার রাতে এমপি এনামুল হকের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘অপপ্রচারে’র অভিযোগে লিজার বিরুদ্ধে এমপির পক্ষে মামলাটি করেছেন তার একান্ত সহকারী ও বাগমারা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ।
এর কিছুদিন আগে আয়েশা আক্তার লিজা নামের ওই নারী ফেসবুকে সংসদ সদস্য এনামুল হক (রাজশাহী-৪) কে তার স্বামী বলে দাবি করা এবং এমপির বিরুদ্ধে ভ্রƒণ হত্যার অভিযোগ তোলার পর গতকাল সর্বশেষ ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, লিজা এনামুল হককে স্বামী দাবি করে ফেসবুকে নানা রকম পোস্ট দিয়েছিলেন। লিজার বাড়ি নগরীর তেরখাদিয়া এলাকায়। তিনি তার সঙ্গে এমপি এনামুলের একাধিক ছবিও ফেসবুকে পোস্ট করেন যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় চলছে।
তবে এমপি এনামুল হকের দাবি, ওই নারীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু আইনগতভাবে তালাকও হয়েছে। তবু বিভিন্ন সময়ে টাকার জন্য ব্ল্যাকমেইল করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার সম্মানহানি করেন। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন তিনি।
৩০ মে আয়েশা আক্তার লিজা প্রথম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এমপি সাহেবের রক্ষিতা বা প্রেমিকা নই দ্বিতীয় বউ আমি।’ আরেকটি পোস্টে তিনি লিখেন, ‘এমপি সাহেব আমার এই কথাটা যদি কারও কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়, তারা বিয়ের কাগজ দেখতে পারেন।’ এর দুই ঘণ্টা পরে আরেকটি পোস্টে লিখেন, ‘একজন সংসদ সদস্য অনেক বড় অবস্থানের মানুষ। তার বিরুদ্ধে চাইলেই কেউ মিথ্যা অপবাদ দিতে পারে না। আমার কথাগুলো যদি মিথ্যা হতো তাহলে এতক্ষণে পুলিশ আমাকে থানায় নিয়ে যেত। আমি যা কিছু বলছি এবং বলব সব সত্যি। আপনারা আমাকে বিরক্ত না করে ধৈর্য ধরে পাশে থাকুন।’ এরপর এমপি এনামুলের সঙ্গে একাধিক ছবিও পোস্ট করেন লিজা। লিজা আরেকটি পোস্টে লিখেন, ‘২০১৮ সালের ১১ মে আমাদের বিয়ে হয়। প্রথমে আট বছর আগে আমাদের বিয়ে হয় মৌখিকভাবে। তার বাগমারার বাড়িতে। কিন্তু লিখিত বিয়ের পর গত দুই বছর ধরে তিনি আমাকে গোপনে স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে আসছেন। এখন তিনি একটি ভুয়া কাগজ করে আমাকে তালাক দিয়েছেন। সেখানে আমার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। এ কারণে আমি পরিস্থিতির শিকার হয়ে ফেসবুকে এসব কথা বলেছি। আমি আমার সংসার করতে চাই আমার স্বামীর সঙ্গে।’
এ প্রসঙ্গে আয়েশা আক্তার লিজা বলেন, ‘আমি তার বিরুদ্ধে (এমপি) মামলা করতে চাই।’ মামলা করছেন না কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আদালত খুললে মামলা করব।’
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান সাংসদের পক্ষে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত কওে জানান, মামলায় বলা হয়েছে, আয়েশা আক্তার লিজাকে তালাক দেওয়ার পর তিনি এমপি এনামুল হকের কাছে নিজের ব্যাংক লোনের এক কোটি টাকা পরিশোধের জন্য চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি দিয়ে এমপি এনামুল হকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে তার সুনাম ক্ষুণ্ন করেছেন।
পিবিএ/এমএ