এড. শক্তিমান হত্যাকান্ডের মূল আসামি আটক

rangamati-adv-murder-arrest

পিবিএ,রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট শক্তিমান চাকমার হত্যাকান্ডের মূল আসামি কুনেন্টু চাকমাকে (২৩) আটক করেছে যৌথবাহিনী। এসময় তার কাছ থেকে ১টি বিদেশী পিস্তল, ৫ রাউন্ড এ্যামুনিশন, চাঁদা আদায়ের নগদ ৪ লক্ষ ৫ হাজার ৮শ টাকা, ৪টি মোবাইল ফোনসহ চাঁদা আদায়ের বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করে যৌথবাহিনী।

শনিবার দুপুরের দিকে সদরের কুতুকছড়ি উপর পাড়া থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অস্ত্র ও চাঁদার সরঞ্জামসহ তাকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে। আটককৃত কুনেন্টু চাকমা জুরাছড়ি উপজেলার ধামের পাড়া এলাকার ধনমোহন চাকমার ছেলে ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে,আটক কুনেন্টু চাকমা এবং কুতুকছড়ি এলাকার ইউপিডিএফ (প্রসীত) দলের চীফ কালেক্টর রবিচন্দ্র চাকমা প্রকাশ অর্কিড চাকমা,গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের আহবায়ক ধর্মসিংহ চাকমা, ইউপিডিএফ (প্রসীত) দল সমর্থিত কাউখালী উপজেলার সংগঠক সম্রাট চাকমা ও সশস্ত্র দলের সদস্য রনজিৎ চাকমাসহ আরো বেশ কয়েকজন উত্তোলিত চাঁদা বন্টন সংক্রান্ত বৈঠক করছে। এসময় কুনেন্ট চাকমাকে আটক করতে পারলেও বাকীরা যৌথবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়।

আটককৃত কুনেন্টু চাকমা চাঁদাবাজির কথা স্বীকার করে বলেন,তিনি একজন ছাত্র। ইউপিডিএফ (প্রসীত) দলের নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন সময় রাঙ্গামাটি জেলার জেলা প্রশাসক,সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের হুমকি প্রদান করে। এছাড়াও পার্বত্য এলাকার বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোর সংবাদ প্রকাশের কারণে ইউপিডিএফ (প্রসীত) দলের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের প্রাণের নাশের হুমকিও প্রদান করেছে কুনেন্টু চাকমা। এমনকি তার উপস্থিতিতে নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট শক্তিমান চাকমার হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এই পরিকল্পনায় জেএসএস(সন্তু) সমর্থিত সশস্ত্র দলের কয়েকজন সদস্যও উপস্থিত ছিল বলে তিনি জানান।

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য এলাকায় বসবাসকারীদের জুম্ম জনগোষ্ঠী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার নামে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কথা বলে তার মত কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের দলে যোগদানের জন্য নিয়মিত হুমকি প্রদান করে ইউপিডিএফ (প্রসীত) দল। দলে যোগদান না করলে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে এবং তার মত অনেক ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে চাঁদা আদায়সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করানো হলো ইউপিডিএফ (প্রসীত) দলে সন্ত্রাসীদের কাজ। তিনি জুম্ম জনগোষ্ঠী পাহাড়ি ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে করে বলছেন,তার মত কেউ এই ভূল না করে স্বাভাবিক জীবনযাপন করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।

এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি কোতয়ালী থানার এস আই মো: আনোয়ার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,আটককৃত কুনেন্টু চাকমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের মামলা দায়ের করা হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সংগঠনের নামে পার্বত্যাঞ্চলে খুন,গুম ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে রাজনীতির আড়ালে পার্বত্য এলাকার মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। এছাড়াও ফেসবুকে বিভিন্ন আইডি ব্যবহার করে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সদস্যরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক বিভিন্ন কার্যক্রম ও স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন উল্লেখ্যযোগ্য ব্যক্তিবর্গকে হুমকি প্রদান করছে। এদের হাত থেকে পাহাড়ি -বাঙ্গালি কেউ রেহায় পায় না। পার্বত্যাঞ্চলে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে যৌথবাহিনীর এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

পিবিএ/এনএ/এফএস

আরও পড়ুন...