পিবিএ, ঢাকা : ভারতে লকডাউন তুলে নেয়ার পর সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের মত জোন ভিত্তিক লকডাউন বা কড়াকড়ি আরোপের কথা জানিয়েছে সেদেশের কেন্দ্রীয় সরকার।
ভারতের গণমাধ্যমে প্রকাশ, মঙ্গল ও বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে হতে চলা মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক থেকে এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
আনলক-১ পর্বে করোনা ও আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে ওই বৈঠক ডাকা হয়েছে। এরই মধ্যে আজ সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈঠকের বিষয় দিল্লির করোনা পরিস্থিতি হলেও, সেখানেও দেশে লকডাউন জারি করা নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে সদ্য অর্থনীতির চাকায় গতি আনতে একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। ছোট শিল্পের জন্য ঋণের ঘোষণা ও বণ্টন শুরু হয়েছে। দফতর খুলেছে, খুলেছে দোকান-শপিং মল। অল্প হলেও শুরু হয়েছে কেনা-বেচা। কিছু শিল্পগোষ্ঠী শ্রমিকদের গাড়িভাড়া দিয়ে বাড়ি থেকে কাজের জায়গায় ফেরার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। এখন নতুন করে লকডাউনের ঘোষণা হলে অর্থনীতির পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। ভারতের সরকারি সূত্রের মতে, গোটা দেশে নতুন করে লকডাউনের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কেবল সংক্রমণস্থলগুলির জন্য প্রয়োজনে কড়া নিয়মবিধি জারি করা হবে।
এটা ঠিক যে, ভারতে স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ সংক্রমণ রুখতে কড়া লকডাউনই একমাত্র উপায় বলে নীতিগত ভাবে মনে করেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাথাব্যথা হল, নতুন এলাকায় সংক্রমণ। ভারতের ১৪টি পৌরসভা ও ১০টি শহরে সংক্রমণের হার জাতীয় গড়ের চেয়ে বেশি থাকায় উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকার। যার মধ্যে চার মেট্রো শহর ছাড়াও রয়েছে পুণে, আমদাবাদ, হায়দরাবাদের মতো বাণিজ্যিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ শহর। তারই মধ্যে দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তুলেছে ছোট রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে সংক্রমণের বিস্তার। যেমন লাদাখ। গত দু’দিনে ১৯৮ জন সংক্রমিত হয়েছেন ওই এলাকায়। যে সিকিমে ২৪ মে প্রথম সংক্রমণের ঘটনা জানা যায়, সেখানে গত সপ্তাহে এক ধাক্কায় বেড়েছে ৫০ জন রোগী। গত এক দিনে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে হরিয়ানা (৪১৫ জন), গোয়ায় (৬০ জন)। এক সময়ে গোটা উত্তর-পূর্ব সংক্রমণ-মুক্ত ছিল। সেখানে গত এক দিনে ত্রিপুরা (১২১ জন), মণিপুর (৬৪), ও অসমে (২২০ জন) করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে জাতীয় হারকে টপকে আয়তনে বড় রাজ্যগুলির সংক্রমণের হারের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে ছোট রাজ্যগুলি।
সবদিক বিবেচনা করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার যে শহরগুলিতে সংক্রমণের হার খুব বেশি, সেখানে এলাকা চিহ্নিত করে বাংলাদেশের মত জোন ভিত্তিক ব্যবস্থা নিতে পারে।
পিবিএ/এমএ