তালায় স্কুলের শ্রেণী কক্ষে চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য

পিবিএ,তালা (সাতক্ষীরা): করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের রাজাপুর ইউ,বি আর উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষে চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য।অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুব্রত কুমার দাস দৈনিক দুই শিফটে একই বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষ ব্যবহার করে চালাচ্ছেন এই কোচিং বাণিজ্য । দৈনিক দুই শিফটে ১৫-২০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে কোচিং করান তিনি।
শিক্ষক সুব্রত রাজাপুর ইউ,বি আর উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১২ সালে সহকারী শিক্ষক (বিজ্ঞান) হিসাব যোগদান করেন। তিনি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের বশিরাবাদ গ্রামের মানিক চন্দ্র দাসের ছেলে।

সরকারি নির্দেশনা ও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিকে উপেক্ষা করে অর্থলোভী শিক্ষক সুব্রত দাস উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত ছাত্র-ছাত্রীদের ফেলছেন করোনা ঝুঁকিতে।করোনা প্রাদুর্ভাবে অভিভাবক ও স্থানীয়রা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের পরও লাগাম টানা যাচ্ছে না ঐ শিক্ষকের।কারণ তিনি নিজেকে দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের মন্ত্রী, এমপিদের নাম ব্যাবহার করে ক্ষমতা জাহির করেন।

এবিষয়ে রাজাপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা ও আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের গ্রভাষক প্রদীপ সরকার বলেন,শিক্ষক সুব্রত কুমার বিশ্বাস শ্রেণী কক্ষে ছাত্র -ছাত্রীদের পাঠদানের নিদিষ্ট সময়ে পাঠদান না দিয়ে নিজের ক্ষমতার বলাই বোঝানোর বিভিন্ন গল্পে সময় নষ্ট করেন। তিনি আরো বলেন,শুধু কোচিংই নয়, স্কুলের সকল প্রকার প্রশাসনিক কজে নিজেকে তুলে ধরতে চান আকাশ চুম্বি ভাবে এবং বিভিন্ন বই কোম্পানিগুলোর সাথে হাত মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের নিম্নমানের গাইড বই কিনতে বাধ্য করান তিনি ।

রাজাপুর ইউ,বি আর উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী তপতী বিশ্বাস (শ্রেণী রোল -২) বলেন, করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় এস এস সি পরীক্ষার ফল খারাপ হবে ভেবে কোচিং করনে তিনি। তপতী আরো বলেন, বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার কারণে তার কাছ থেকে মাসে ৬০০ টাকা অতিরিক্ত ফি নেওয়া হয়।যারা মানবিক বিভাগে কোচিং করেন তারা ২০০ টাকা করে দেয় সুব্রত স্যারকে।

এ ব্যপারে শিক্ষক সুব্রত কুমার দাশ এ প্রতিনিধিকে জানান, আমি স্কুল সভাপতির কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে স্কুলের বৈদ্যুতিক সুযোগ সুবিধাসহ শ্রেণী কক্ষ ব্যবহার করছি। সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষা করে কেন কোচিং করাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন পড়াচ্ছি তাতে কি হয়েছে বলে উল্টে এপ্রতিনিধিকে প্রশ্ন করেন।

এবিষয়ে রাজাপুর ইউ,বি আর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিমাই মন্ডল এপ্রতিনিধিকে বলেন,শিক্ষক সুব্রত কুমার দাশ স্কুলের শ্রেণী কক্ষ ব্যবহার করে কোচিং করাচ্ছেন কিনা সেটা তার জানানেই।

তালা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান এ প্রতিনিধিকে জানান, কোচিং না করানোর জন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্টানকে নোটিশ করা হয়েছে। তারপরও যদি কোন শিক্ষক কোচিং বাণিজ্য চালায় তবে সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল – মামুন এ প্রতিনিধিকে বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সরকার যেখানে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণ করেছে, তখন কোচিং চালানোর কোন সুযোগই নেই। তদন্ত করে কোচিং পরিচালনাকারী শিক্ষক সুব্রত কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পিবিএ/মোঃ রোকনুজ্জামান টিপু/এসডি

আরও পড়ুন...