রংপুরের পীরগঞ্জে বসতবাড়ি ভাংচুর

পিবিএ, রংপুর: রংপুরের পীরগঞ্জে জলাইডাঙ্গা গ্রামে বসতবাড়িতে হামলা, মারপিট ও ভাংচুর করে ১৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটপাট অভিযোগ উঠেছে । এ ঘটনায় পুলিশসহ আহত ১৫ জন।
এদিকে এ ঘটনায় এনামূল হক নামের এক ব্যক্তি মামলা করলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। অন্যদিকে দূবৃত্তরা গ্রেফতার না হওয়ায় ওই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর বাড়িতে দফায় দফায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও বাড়ি ঘরে মানুষের মূল মূত্র দিয়ে ঢিল ছুড়ে পরিবেশ নষ্ট করছে বলে জানাগেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা দূবৃত্তের ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

মামলার বিবরনে জানাগেছে, রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার চৈত্রকোল ইউনিয়নের জলাইডাঙ্গা গ্রামে মৃত সৈয়দ উদ্দীনের পুত্র এনামূল হক, আমিনুল ইসলাম, ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকটি পরিবাবর পৈত্রিক ভাবে দীর্ঘ ৭০ ধরে জলাই ডাঙ্গা মসজিদ সংলগ্ন একটি জমিতে বসবাস করে আসছে। জলাই ডাঙ্গা পূর্বপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি ইউনুছ আলী, মোসলেম উদ্দিন, শাহাজান মন্ডলসহ ১৫/১৬ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল মসজিদের ৩ শতক জমি দাবি করে। উক্ত জমিকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় দু-পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন রাখতে এনামূলহক রংপুর আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৪৪/১৪৫ ধারার মিছপিটিশন মামলা করেন যার নং (৭৬৫)। এর পরেও উক্ত জমি উদ্ধারের নামে ইউনুছ আলী ও তার লোকজন গত ১৮ই জুন সকালে এনামূল হক ও আমিনুল ইসলাম, এবং মিজানুরের বসত বাড়িতে অর্তকিত হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট ও মারধর করে। পরে এনামুল হক বাদি হয়ে ২০ জনকে আসামী করে পীরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। এদিকে মামলায় আসামীরা জামিন পেয়ে আরও বেপরোয়া উঠে।

এ ঘটনায় ৩ আগষ্ট সন্ধ্যায় এনামূল হকের ভাই লুৎফর ও আহসান হাবিব লেবু, স্থানীয় গোপালপুর বাজার থেকে বাড়ি ফেরার সময় প্রতিপক্ষ মোসলেম, শাহাজান, আরিফুলসহ ১০/১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল তাদের গতিপথ রোধ করে মারপিট, শ্বাসরুদ্ধ হত্যার চেষ্টা করে। সঙ্গে থাকা নগদ ১ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, এনামূলহক ও জলাই ডাঙ্গা মসজিদের উভয় পক্ষের ওই জমির সি এস, এস এ, ও আর এস মাঠ রেকর্ডে নাম আছে।
অভিযুক্ত মসজিদ কমিটির সভাপতি ইউনুছ আলী বলেন, সি এস,এস এ, আর এস মসজিদের নামে ৯ শতক জমি রেকর্ড আছে। কিন্তু এনামূলের পরিবারের লোকজন দীর্ঘ দিন থেকে ওই জমিটি ভোগদখল করে আসছে। জমিটি উদ্ধার করতে গেলে তারা বাধা প্রদান করায় এই ঘটনার সৃষ্টি হয়।

এনামুলের ভাই সাইফুল ইসলামের বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মন্ডল, পৌর মেয়র তাজিমুল ইসলাম শামিম ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শরিফউর রহমান মন্ডল মিলনসহ বৈঠকে বাড়ি ঘর ভাংচুরে ক্ষতি পূরণের জন্য মসজিদ কমিটিকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের সিদ্বান্ত দেয়। মসজিদ কমিটি তা দিতে অস্বকৃতি জানালে তা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এদিকে ইউনুছ আলীর লোকজন আমাদের বাড়িতে মানুষের মলমুত্র ছিটিয়ে পরিবেশ নষ্ট করছে।

ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্য এনামূল হক জানান, পূর্ব পুরুষরা জলাই ডাঙ্গা আহলে হাদিস মসজিদের জমি দান করেছে। আমারা দীর্ঘ থেকে ওই মসজিদটি পরিচালনা করে আসছি। কিন্তু বর্তমান বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় নতুন কমিটির সভাপতি ইউনুছ আলী পারিবারিক বিরোধকে জড়িয়ে ঘরবাড়ি ভাংচুর করে দখলের চেষ্টা করছে। পরিবার পরিজন নিয়ে বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা নুরে আলম বলেন, আমি ঘটনা স্থলে পরিদশন করেছি। বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
পীরগঞ্জ থানার ওসি সুরেশ চন্দ্র বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ও মেয়র বিষয়টি মিমাংসা করেছে একটি পক্ষ তা মানেনি। যে যেমন অপরাধ করবে তেমন মামলা হবে।

পিবিএ/মেজবাহুল হিমেল/এসডি

আরও পড়ুন...