পিবিএ,গোপালপুর (টাঙ্গাইল): টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হাদিরা ইউনিয়নের হরিদেব বাড়ি, দরবারপুর ও চাতুটিয়া গ্রামবাসী শিয়ালের কামড় আতঙ্কে অতিবাহিত করছে রাতদিন। গত দুদিনে শিয়ালের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত হয়ে আহত হয়েছেন এসব এলাকার ৫ জন নারীপুরুষ।
আজ সোমবার সরজমিনে জানা যায়, উপজেলার হরিদেব বাড়ীর মৃত ছলিম উদ্দিনের স্ত্রী জহুরা বেগম (৫০) শুক্রবার দুপুরে বাড়ির পিছনে খড়িপাতা আনতে যান। এসময় ঝোপ থেকে হঠাৎ একটি শিয়াল দৌড়ে এসে তাকে আক্রমণ করে পায়ে কামড়ে ধরে। পরে ডাকচিৎকারসহ শিয়ালের মুখ থেকে জহুরা তার পা ছাড়াতে গেলে, চারটি আঙ্গুলে কামড়ে দিয়ে হাতের মাংস ছিঁড়ে নিয়ে শিয়ালটি দৌড়ে পালিয়ে যায়।
একই বাড়ির মৃত বারেকের পুত্র অাইসক্রিম বিক্রেতা মো. হাবেল (৩৫) জানান, সন্ধেবেলায় বাড়ির উঠানে একটি শিয়াল তাদের মুরগিকে ধাওয়া দেয়। এসময় তিনি ঘরের বারান্দা থেকে শিয়ালটিকে ধমক দিলে শিয়ালটি দৌড়ে এসে তার হাতে কামড় বসিয়ে দেয়। শিয়ালের মুখ থেকে হাত ছাড়াতে গেলে শিয়ালটি তার বাঁহাতের একটি আঙ্গুল কামড়ে ছিঁড়ে নিয়ে যায়।
ঐপাড়ার হামেলা বেগম (৪৫) নামে আব্দুল ছাত্তারের স্ত্রী বলেন, তিনি বাড়ির পাশের রাস্তা থেকে ছাগল আনতে গেলে হঠাৎ একটি শিয়াল তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এসময় শিয়ালটি তার কোমরে এবং পিঠে দাঁত দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে সটকে পড়ে।
চাতুটিয়া উত্তর পাড়ার বাহাজ উদ্দিন জানান, তার স্ত্রী ফিরোজা (৫৫) শনিবার বিকেলে রান্নাঘরের সম্মুখে বসে মাছ কাটছিলেন। হঠাৎ তিনি দূর থেকে শিয়াল-শিয়াল চিৎকার শুনে বাড়িতে ঢুকে দেখতে পান, উঠোনে তার স্ত্রী একটি শিয়ালের সাথে ধস্তাধস্তি করছে। তাকে দেখে পালানোর আগেই তার স্ত্রীর মুখমণ্ডলের বিভিন্নস্থানে শিয়ালটি দাঁতের কামড়ে রক্তাক্ত করে ফেলে। একইভাবে পাশ্ববর্তী গ্রাম দরবারপুরের একজনকে হিংস্র শিয়াল আক্রমণ করে আহত করেছে।
হরিদেব বাড়ীর বাসিন্দা খোকা আলম জানান, অত্র ইউনিয়নের নিচু এলাকাগুলো বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার, এই গ্রামের বিভিন্ন ঝোপঝাড়ে আশ্রয় নিয়েছে অসংখ্য শিয়াল। শিয়ালের ডাকচিৎকার ও কামড়ের ভয়ে গ্রামের শিশুসহ নারীপুরুষরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। শিয়ালের আক্রমণ থেকে বাঁচতে গ্রামবাসীরা মিলে ইতোমধ্যে চারটি শিয়ালকে মেরেো ফেলেছে। তিনি আরও জানান, শিয়ালের আক্রমণে আহত হওয়া এই গ্রামের তিন ব্যক্তিই হতদরিদ্র মানুষ। টাকার অভাবে স্থানীয় ওষুদের দোকানে থেকে কোনরকম চিকিৎসা নিয়ে তারা বাড়িতে যন্ত্রণাকাতর হয়ে দিন কাটাচ্ছে।
এদিকে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরে, অসহায় তিনটি পরিবারকে দশ কেজি করে চাল দিয়েছেন হাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের তালুকদার।
আহতদের সঠিক চিকিৎসা দেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডাক্তার আলিম আল রাজী।
চিকিৎসার জন্য আহতদেরকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ বিশ্বাস।
পিবিএ/মো.নুর আলম/এসডি