ফকিরহাট সাব-রেজিস্টার অফিসের যত অনিয়ম ও দূর্ণীতি

আহসান টিটু, ফকিরহাট (বাগেরহাট): বাগেরহাটের ফকিরহাটে উপজেলা সাব-রেজিষ্টারের যোগসাজশে রমরমা ঘুষ বানিজ্য চালাচ্ছে সাব-রেজিষ্টারসহ অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। নানা অনিয়মের মাধ্যমে ও বিভিন্ন অবৈধ কৌশলে ঘুষ বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে বর্তমান সাব রেজিস্টার ।

অনুসন্ধান ও তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে জানা যাচ্ছে, নিজ হাতে কখনো ঘুষ গ্রহণ না করে অফিসের অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাধ্যমেই ঘুষ বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারী রশিদ ফি ছাড়াই সরকারী নির্ধারিত অর্থের তুলনায় অতিরিক্ত ফি গ্রহণ করে থাকে এ অফিসের অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। শুধু তাই নই সাব-রেজিস্টার অফিসে দলিলের পাতা প্রতি ২৪ টাকা সরকারি ফি নির্ধারণ করা থাকলেও সাব রেজিস্টারের সম্মতিতে অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী কোন প্রকার সরকারি রশীদ ছাড়া দলিলের পণ মূল্য ছোট বড় হিসাবে বিভিন্ন রকমের অর্থ আদায় করে যা সম্পূর্ণ অনৈতিক।

জানা যায়, এক লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পণ মূল্যের দলিলে ২০০০ টাকা, ৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ পর্যন্ত ২৫০০ টাকা, ১০ লক্ষ টাকার উর্ধে পণ মূল্যের দলিল প্রতি ৩০০০ টাকা করে ঘুষ বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া ১০০০ টাকা ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রি কৃত দলিলের ৫২/ক (দলিলের টিকেট) ধারার রশিদ দলিলের গ্রহীতা ছাড়াই তৃতীয় ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করা হয়।

জমির নিবন্ধন, নামজারি, জাল দলিলে জমি দখলসহ নানা ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। জমির দলিল আটকে রেখে ভুক্তভোগীদের চাপের মুখে ঘুষ দাবি সাব-রেজিস্ট্রার, উম্মেদার, পিওন ও নকল নবিশদের নিয়মিত আচরণে পরিণত হয়েছে।

ঘুষ আদায়ের কৌশল হিসেবে সাব-রেজিস্ট্রারের রুটিন মাফিক কাজ নকলনবিশ, উম্মেদার ও পিওন দিয়েও করানো হচ্ছে। এই সুযোগে সাব রেজিষ্টার ছাড়াও নকলনবিশ, উম্মেদার ও পিওন হয়ে গিয়েছে অঢেল টাকার মালিক। বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন ম্যানুয়াল-২০১৪ মানছেন না সাব-রেজিস্ট্রাররাও। তারা নিবন্ধন ম্যানুয়াল অনুযায়ী নিজেদের কাজ নকলনবিশ, উম্মেদার ও পিওনদের দিয়ে করাচ্ছেন। দলিল চেক করার কাজ সাব-রেজিস্ট্রারদের করার নিয়ম থাকলেও তা মানছেন না তারা।এমন কি রেজিষ্ট্রেশন ডিপার্টমেন্টের আইজিয়ার, জেলা রেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্ট্রার এর প্রধান সহকারীর বরাত দিয়েও ঘুষের টাকা দাবী করেন।

সাব-রেজিষ্টারের সপ্তাহের প্রতি কর্মদিবসে দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও সে অদৃশ্য শক্তির বলে সপ্তাহে মাত্র ২ দিন (মঙ্গলবার আর বুধবার) তার চেয়ারে বসেন বাকি দিনগুলো তার ছায়াও দেখা যায় না!

পিবিএ/এসডি

আরও পড়ুন...