গরুচোর অপবাদ: মা ও মেয়েসহ ৫ জন জেলহাজতে

পিবিএ,চকরিয়া (কক্সবাজার): কক্সবাজারের চকরিয়ায় মা-তরুণী দুই মেয়ে ও এক ছেলেসহ পাঁচজনকে ‘গরুচোর’ আখ্যা দিয়ে একদল দুর্বৃত্ত নির্মমভাবে পিটিয়েছে। পরে কোমরে রশি বেঁধে তাদের প্রকাশ্যে সড়কে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে। সেখানে চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম নিজে তাদের আবার মারধর করেন। একপর্যায়ে খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে চকরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে। গত শুক্রবার দুপুরে হারবাং ইউনিয়নের পহরচাঁদা এলাকায় এ ঘটনা ঘটলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনার ছবি এবং ভিডিও প্রকাশের পর এটি শনিবার সবখানে জানাজানি হয়।

পরে তাদের বিরুদ্ধে পহরচাঁদা এলাকার এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মাহমুদুল হক বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে চকরিয়া থানায় গরু চুরি মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ আহতদের হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জানান, ‘শুক্রবার স্থানীয়রা ফাঁড়িতে খবর দিলে আমাদের ফোর্স গিয়ে গুরুতর অবস্থায় মা-মেয়েসহ পাঁচজনকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আসি। আমরা তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।’

হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে তাদের ওপর নির্যাতন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ খবর পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাদের উদ্ধার করে। তবে মারধরের বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। তবে ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, একদফা মা-মেয়ে ও ছেলের ওপর নির্যাতন চলার পর হারবাং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম চৌকিদার (গ্রাম পুলিশ) পাঠিয়ে তাদের রশিতে বেঁধে তার কার্যালয়ে এনে ‘চোর’ অপবাদ দিয়ে তাদের বেধড়ক পেটায়। পরে চেয়ারম্যানের লোকরাই হারবাং পুলিশ ফাঁড়িতে ফোন করে পুলিশ এনে তাদের হাতে মা-মেয়েসহ পাঁচজনকে আহত অবস্থায় তুলে দেন। হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সেটা বন্ধ পাওয়া যায়। চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, হারবাং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মা-মেয়েসহ পাঁচজনকে হাত-পা খোলা অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে। মারধরে আহতদের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে ভর্তি করা হয়। গরুর মালিক পহরচাঁদা গ্রামের এক শিক্ষক বাদী হয়ে ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে গরু চুরির অভিযোগ এনে একটি মামলা রুজু করেন। ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

পিবিএ/এসডি

আরও পড়ুন...