পিবিএ,সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে ৫ম দফা বন্যায় কৃষি ও মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, নষ্ট হয়েছে আবদী জমির ফসল। এতে জেলায় প্রায় উভয় খাতে ২৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে কৃষিখাতে ২১ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও মৎস্য খাতে ২ কোটি ৫২ লাখ ৯৪ হাজার টাকা।
জেলায় মোট ৫৯২ জন মৎস্য চাষি ও পুকুর মালিক এই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের নাম ও ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানোর দাবী করেছেন তারা।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, এবারের বন্যায় জেলার ৭শ ৬০টি পুকুর, যার আয়তন ২৬৭ হেক্টর ৪ শতক। এসব পুকুরের ১৫১ মেট্রিক টন ৩০ কেজি মাছ ও ৯ লাখ ১৯ হাজার পোনা ভেসে গেছে। ভেসে যাওয়া মাছের মূল্য ২ কোটি ৫২ লাখ ৯৪ হাজার ও পোনার মূল্য ১৩ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা মৎস্য খাতে ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে ৩১ লক্ষ ৭ হাজার টাকা। মোট ক্ষতি ২ কোটি ৫২ লাখ ৯৪ হাজার ২ শত টাকা।
সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ৫ম দফা বন্যায় ৯টি উপজেলায় ২০২৩ হেক্টর সবজি, ৭২৭০ হেক্টর পাট, ১৭৬০ হেক্টর তিল, ২৬৫৫ হেক্টর আউশ, ২০৬২ হেক্টর আখ, ৭৫৭২ হেক্টর বোনা আমন, ৩৪৬ হেক্টর রোপা আমন, ৬১৩ হেক্টর বীজতলা সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়েছে। মোট ২২ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমির ফসল বিনষ্ট হওয়ায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ২১ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা এসএম শহীদ নূর আকবর জানান, এক সপ্তাহ ধরে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো ফসলি মাঠে পানি আছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কয়েকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে কৃষি বিভাগ।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহেদ আলী জানান, জেলায় মৎস্য খাতে বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।
সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষীদের প্রণোদনা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে মৎস্য চাষীকে পুকুরে বেশি বেশি করে খাবার দিতে বলছি। এছাড়া পুকুরে গাছের ডাল ফেলার পরামর্শ দিচ্ছি। এতে করে মাছ পুকুরে আশ্রয় নেবে। মৎস্য চাষী কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।
পিবিএ/সোহাগ হাসান জয়/এসডি