ঠাকুরগাঁওয়ে মুক্তিযোদ্ধার যুবতি মেয়েকে হত্যা ও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ!

পিবিএ, ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা সস্তারাম সিংহ’র যুবতি মেয়ে পূরবী রাণী (৩১)কে বাসা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে বেধড়ক মারধর, শ্বাসরোধ করে হত্যা চেষ্টা ও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশি জগদিশ, তার তিন ভাই, ছেলে স্ত্রীসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে।

এসময় বোনকে বাঁচতে গিয়ে আহত হয় পূরবী রাণীর ছোটভাই নিরেন রায়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে আহত অবস্থায় পূরবী রাণী ও তার ভাইকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে নিরেন বাসায় ফিরলেও শারীরিক অবস্থা অবনতির আশঙ্কায় পূরবী রাণীকে রিলিজ দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের মহিলা সার্জারী বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ আগষ্ট) দুপুরে সদর উপজেলার হরিহরপুর গ্রামে (ঠাকুরগাঁও সুগারমিলের পিছনে) তার উপর নারকীয় হামলাসহ ধর্ষন চেষ্টা চালায় জগদিশের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী বাহিনী।

হাসপাতালের বেডে কান্নাজড়িত কন্ঠে পূরবী রাণী জানায়, আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবা প্রয়াত হওয়ার পর থেকেই আমার ও আমাদের দেড় কাঠা জমির উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে প্রতিবেশি জগদিশ রায়ের। বিভিন্ন সময় তার নেতৃত্বে আমার উপর হামলা ও আমাকে হয়রানি করাসহ আমাকে ধর্ষণ করে লাশ গুম করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে সে। গতকাল তা বাস্তবায়ন করতে আমাকে আমার বাসা থেকে জোর পূর্বক টেনেহিচড়ে বের করে ধর্ষণ করে আমার লাম গুম করার উদ্দেশ্যে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেস্টা করে। এসময় ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে আমাকে বাঁচাতে আমার ছোট ভাই নিরেন এগিয়ে এলে তাকেও বেধড়ক মারধর করা হয়।

জোড় পূর্বক আমাকে তুলে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করতে থাকে তারিনী মহন এর ছেলে জগদিশ, সুভাস, নরেন ও গিরেন, উপেন এর ছেলে বিবেকানন্দ, ভবানন্দর ছেলে অশোক, গীতা, লাভলী, রীনা, সুলতানাসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২জন। এক পর্যায়ে আমাকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে আমার গলা চিপে ধরে জগদিশ। এসময় আমি অজ্ঞান হয়ে পড়লে মৃত ভেবে তারা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে আমাকে ও আমার ভাইকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।

পূরবী আরও জানায়, শুধু এবারই নয়, তাকে এর আগেও একবার হত্যাচেষ্টা চালায় এ সংঘবদ্ধ দলটি। তার বাড়ী-ঘর লুট করে নিয়ে যায়। তার বাড়ীর সামনের গলির রাস্তাটি নিয়েও বেশ কয়েকবার গন্ডগোল বাধে তাদের সাথে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারিদের ধরপাকড়ের চেষ্টা চালিয়েও তাদের ধরতে পারেনি পুলিশ জানিয়ে সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিছুর রহমান জানান, হামলার খবর পেয়ে সাথে সাথে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে, কিন্তু তার আগেই পালিয়ে যায় হামলাকারিরা। পরে আহত অবস্থায় দুই ভাই-বোনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের উপর পাশবিক হামলার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মর্তূজা বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ আসামীদের ধরতে কাজ করছে পুলিশ।

পিবিএ/এমএসএম

আরও পড়ুন...