খাগড়াছড়িতে জালিয়াতির মাধ্যমে জায়গা দখলের অভিযোগে

পিবিএ,খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মহালছড়ি উপজেলায় আনসার ভিডিপি টিআই শাহীনা আক্তার ও ভাই-বোনের বিরুদ্ধে জমি ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন মহালছড়ি সদর ইউনিয়নের সাবেক ১,২ ও ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি মহিলা সদস্য চায়না আক্তার। গতকাল শুক্রবার(২৮শে আগষ্ট) অনলাইনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। তিনি অভিযোগ করেন তার আপন বড় বোন শাহীনা আক্তার, ছোট ভাই আতাউর রহমান এবং ছোট বোন শামীমা আক্তার সুকৌশলে তার টাকা ও ক্রয়কৃত জমির দলিল আত্মসাৎসহ জমি দখল করে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন মহালছড়ি সদর ইউনিয়নের মহিলা সদস্য থাকা কালীন সময়ে তিনি মহালছড়ির কাটিংটিলা এলাকায় মিন্টু মেম্বারের কাছ থেকে ০.৬৩(তেষট্টি) শতক, লেমুছড়ির আবুল লিডারের কাছ থেকে ০.২৫(পঁচিশ) শতক টিলা ভুমি ও খাগড়াছড়ির শালবন আদর্শ গ্রামে তার নিজের আপন বোন শাহীন আক্তার, পিতা-মৃত সরাফুল ইসলাম, মাতা-নুরজাহান বেগমের কাছ থেকে ০.১৬(ষোল) শতক ভুমি ক্রয় করেন।

২০০২সালে তার বিবাহ হয়ে গেলে তিনি শুশুর বাড়ি চলে যাওয়ার আগে তার যাবতীয় ক্রয়কৃত জমির সমস্ত দলিলাদি তার বড় বোন শাহিনা আক্তার, যিনি বর্তমানে মহালছড়ি উপজেলার আনসার ও ভিডিপি অফিসের টিআই হিসেবে কর্মরত আছেন, তার নিকট আমানত হিসেবে জমা রাখেন। বিয়ের পর তিনি তার খাগড়াছড়ি শালবন আদর্শ গ্রামে বাড়ি নির্মাণ করার জন্য কিছু টাকা জমিয়ে বড় বোন শাহিনা আক্তারের সাথে পরামর্শ করেন এবং তিনি সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে তার কাছ থেকে ৩মাসের জন্য ২লক্ষ টাকা ধার নেন। এর ৪মাস পর বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করলে তার বড় বোন শাহিনা আক্তারের কাছে পাওনা টাকা দাবী করলে শাহিনা আক্তার টাকা ধার নেওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার কওে, কোনো টাকা সে নেইনি বলে সাফ জানিয়ে দেই। এরপর থেকে তার বড় বোন শাহিন আক্তার, ছোট ভাই আতাউর রহমান, ছোট বোন শামীমা আক্তার সুকৌশলে তার টাকা ও ক্রয়কৃত জমির দলিল আত্মসাৎসহ জমি দখলের অভিযোগ করেন তিনি।

এসব প্রতারণা ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তার বৃদ্ধ মা ও ছোট ভাই আরিফুল ইসলামের বউকে ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে শারিরিক নির্যাতন ও লাজ্ঞ্চিত করে কোমর ভেংঙ্গে দেওয়ারও অভিযোগ করেছেন তিনি। এছাড়াও মহালছড়ির লেমুছড়ি এলাকায় আবুল লিডারের কাছ থেকে নেয়া ক্রয়কৃত জমি শাহিনা আক্তার মিথ্যা আশ্রয় নিয়ে দখল করার জন্য আবুল লিডারের অসুস্থতার সুযোগে তাঁর কাছ থেকে খালি স্টাম্পের উপর স্বাক্ষর নিয়ে জাল দলিল তৈরি করেন বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন। উক্ত জাল দলিলের অনুকুলে উল্লেখিত জায়গা বিক্রি করে দেন বলেও তিনি সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করেন।

যার কারনে জমির দলিল উদ্ধার করার জন্য খাগড়াছড়ি সদর থানায় তিনি একটি জিডি ও মামলা করেন। যার জিডি নং ৭০০/২০১৯। মামলা এক বছর চলার পর বিজ্ঞ জজ আদালত চায়না আক্তারের পক্ষে রায় দিয়ে জমির মালিককে চায়না আক্তারকে পুনরায় দলিল লিখে দিতে পরামর্শ দেন। যার মূলে আবুল লিডার চায়না আক্তারকে পুনরায় দলিল লিখে দিয়ে শাহিনা আক্তারের প্রতারণা মূলক দলিল বাতিল বলে লিখিত আকারে ঘোষণা করেন। এই জন্য ক্ষিপ্ত হয়ে শাহিনা আক্তার তার দলবল নিয়ে চায়না আক্তার ও তার ছোট ভাই আরিফের উপর সন্ত্রাসী আক্রমণ চালিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি দেন বলে চায়না আক্তার অভিযোগ করে। এই ব্যাপারে মহালছড়ি থানায় জিডি করা আছে বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন, যার জিডি নং ৬৬১/১৯। চায়না আক্তার আরো অভিযোগ করেন যে তার বৃদ্ধ মা ও ছোট দুই ভাই শাহিনা আক্তারের অত্যাচারে জায়গা জমি বসত ভিটা সবকিছু হারানোর পথে। এছাড়াও শাহিনা আক্তার ও তার চক্র এই পর্যন্ত তার ৫লক্ষ টাকার আর্থিক ক্ষতি ও পঞ্চাশ লক্ষ টাকার জমির দলিল আত্মসাৎসহ জমি দখল করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এই ব্যাপারে গণমাধ্যমের তিনি উল্লেখিত প্রতারক ও জালিয়াতি চক্রের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন, ভুমি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, দূর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন এর সাহায্যে জমি ও জমির দলিল উদ্ধার, জালিয়াতি ও প্রতারনার উপযুক্ত বিচার প্রাথর্না করেছেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত শাহিনা আক্তারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি উপরোক্ত অভিযোগ গুলো পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন। পরবর্তীতে জমির প্রকৃত মালিক বয়োবৃদ্ধ আবুল লিডারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান বিরোধপূর্ণ জায়গাটি তিনি চায়না আক্তারের কাছেই বিক্রি করেছিলেন।

পিবিএ/চাইথোয়াই মারমা/এসডি

আরও পড়ুন...