গাইবান্ধায় প্রতিবন্ধী হাসিনার জীবন কাটছে অনাহারে

পিবিএ,গাইবান্ধা: গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে অসহায় প্রতিবন্ধী হাসিনা বেওয়া (৪৫)’র দিন কাটছে অনাহারে অর্ধাহারে! ঠিক যেনো আর এক আসমানীর গল্প.।

সরেজমিনে প্রকাশ, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার ১নং কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত পল্লী বড় শিমুলতলা গ্রামের বাউলাপাড়া মৃত আবেদ আলীর মেয়ে হাসিনা বেওয়া (৪৫)।হাসিনা বেওয়ার দীর্ঘ ২৫ বছর আগে বিয়ে হয় দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর উপজেলার হিলি এলাকায়।

বিয়ের কিছুদিন পরেই তার স্বামী মারা গেলে হাসিনা বেওয়া স্বামী হারা হয়ে পড়ে। হাসিনা বেওয়া একদিকে স্বামী হারা অন্যদিকে নেই কোন তার সন্তান। বেঁচে নেই তার বাবা-মা। অসহায় অবস্থায় চলে আসে বাবার বাড়ি পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের বড়শিমুলতলা গ্রামের বাউলাপাড়ায়। বাবার বাড়ি এসেও পৈত্রিক সূত্রে কোন জমি না পাওয়ায় সৎ ভাই মুনসুর আলী থাকার মত একটি ঘরের জায়গা দিলে বসতবাড়ি করে একাকীত্ব জীবনে নিজেকে বাঁচাতে অন্যের বাড়িতে কাজকর্ম করে অনেক দুঃখে-কষ্টে অন্ন জুগিয়ে জীবনূজীবিকা নির্ভর করতেন হাসিনা বেওয়া।

ভাগ্যের নির্মম পরিহাস হাসিনা বেওয়া বছর তিনেক আগেই শারীরিক অসুস্থ্তায় প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ে। শারীরিক অসুস্থ্তা ও প্রতিবন্ধী হওয়ায় পারে না স্বাভাবিক চলাফেরা করতে। তার দেখভালের কোন আত্মীয় স্বজন না থাকায় একাকীত্ব জীবনে থাকে তার ছোট্ট ওই ঘরে। বয়সটা যেন তার খুব একটা বেশি নয়। বয়সটা বেশি না হলে কি হবে.? নানা রোগ বাসা বেঁধেছে তার শরীরে। তার শরীরে বাসা বাঁধা রোগ ও পঙ্গুত্ব জীবনের চিকিৎসার অভাবে তিনি আজ বয়সের ভাঁড়ে নুয়ে পড়েছেন।

তার থাকার মত একমাত্র সম্বল একটি ঘর থাকলেও নেই তার ঘরটিতে কোন আলো বা কুপি বাতি,নেই তার পড়নে কোন ভাল কাপড়,নেই তার খাবারের কোন সু-ব্যবস্থা। প্রতিনিয়ত দিন চলে তার অনেক দুঃখ,কষ্টে। তার একমাত্র ভরসা এখন সৎ ভাই ও তার আশে পাশে থাকা প্রতিবেশী মানুষগুলোই। তার সৎ ভাই কিংবা আশেপাশে থাকা প্রতিবেশীরা যখন তাকে একটু খাবার দেয় তখনি অন্ন জোটে তার কপালে। প্রতিবন্ধী হাসিনা বেওয়ার অনাহারে অর্ধাহারে এমনি ভাবেই কাটছে তার প্রতিটি দিন প্রতিটি রাত। হাসিনা বেওয়ার পেটের ক্ষুধার জ্বালা ও অশ্রু ঝড়া চোখের জলে অনাহারে অর্ধাহারের মধ্য দিয়েও আজও স্বপ্ন দেখছে বেঁচে থাকার! এ আসমানীর পাশে কি আমরা এগিয়ে আসতে পারিনা.?

হাসিনা বেওয়ার দিন কাটছে অনাহারে! এমন খবর পেয়ে গত বুধবার সন্ধ্যায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মৃনালকান্তি রায়,শহিদুল ইসলামসহ সরেজমিনে ছুটে যান এবং এ প্রতিবেদক দেখতে পান হাসিনা বেওয়ার সেই করুণ চিত্র।

হাসিনা বেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই এলাকার স্থানীয়রা জানান,হাসিনা বেওয়া সত্যিই একজন অসহায় মানুষ। তার আপন কেউ না থাকায় এ করুন অবস্থা। তাছাড়া তাকে সরকারী-বেসকারীভাবেও কেউ কিছু দেয়নি। তার ভাগ্যে জোটেনি প্রতিবন্ধী ভাতাটাও!

হাসিনা বেওয়ার সাথে কথা বললে তিনি অশ্রু ঝড়া চোখে জানান,মুই কি খাও,কি পরো, আর এভাবে কেমনে থাকো। মোকে তোমরা এ্যানা সাহায্য করো।

হাসিনা বেওয়া চোখের জলে অশ্রু ঝড়ানো কন্ঠে নিজের জীবন বাঁচাতে সরকারী- বেসরকারী,এনজিও ও সমাজের ধনী বিত্তবানদের সকলের কাছে সাহায্য সহযোগিতা কামনা করছেন।

পিবিএ/এল.এন. শাহী/এসডি

আরও পড়ুন...